প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে নির্মিত হয়েছে তথ্যচিত্র ‘হাসিনা-অ্যা ডটার’স টেল’।সম্প্রতি অনলাইনে প্রকাশ পেয়েছে এই ফিচার লেন্থ ডকুমেন্টারির ট্রেইলার ও একটি গান। তারপর থেকেই এই ডকুমেন্টারির প্রতি মানুষের তুমুল আগ্রহ তৈরি হয়েছে। সেই আগ্রহ থেকেই সবাই মুক্তির তারিখ জানার জন্য অপেক্ষা ছিল।
৭০ মিনিট দৈর্ঘের এই তথ্যচিত্রে শেখ হাসিনাকে একজন মমতাময়ী মা, স্নেহময়ী বোন এবং দায়িত্বশীল একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।
আগামী ১৬ নভেম্বর পিপলু আর খান পরিচালিত এই ডকুমেন্টারি মুক্তি পেতে যাচ্ছে দেশের বেশ কয়েকটি প্রেক্ষাগৃহে।
পরিচালক পিপলু খান বলেন, রাজধানীর ব্লকবাস্টার সিনেমা, স্টার সিনেপ্লেক্স, মধুমিতা এবং চট্টগ্রামের সিলভার স্ক্রিন সিনেমা হলে মুক্তি পাবে তথ্যচিত্রটি।
তিনি আরও বলেন, আমি কিন্তু এই কাজটা করার সময় প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কাজ করিনি। একজন সাধারণ শেখ হাসিনা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কন্যাকেই দেখছি। এর বেশি আর কিছু দেখার দরকার নেই। আমার ডকুমেন্টারিতে শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে যাইনি। আমাকেও সেই স্বাধীনতা তিনি দিয়েছেন। বলেছেন, ছবিটাকে আমি যেভাবে দেখতে চাই, সেভাবেই যেন কাজটা করি। বাঁধা-ধরা কোনো ব্রিফিং ছিল না। এছাড়া কাজটি যেহেতু একজন পলিটিক্যাল ফিগার নিয়ে, এটার ইতিহাস নিয়ে বেশ রিসার্চ করতে হয়েছে। এই রিসার্চ করতে আমাদের বেশ কিছু সময় চলে গেছে। এখানে শেখ হাসিনাকে একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।
ফেসবুক পেজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যবয়সী একটি ছবি সমৃদ্ধ পোস্টার প্রকাশ করে মুক্তির তারিখ জানানো হয়েছে।
প্রকাশিত ট্রেইলারটি ব্যাখ্যা করেছেন পিপলু আর খান। তিনি বলেন, ট্রেইলারে কিন্তু আমারা শেখ রেহানার কণ্ঠ শুনেছি। আমি ইচ্ছা করেই ট্রেইলারে শেখ হাসিনার কণ্ঠ রাখিনি। এমনকী তাকে পুরোপুরি দেখায়নি। তার উপস্থিতি এবং কণ্ঠ দর্শক-শ্রোতাদের জন্য আরও বড় চমক হয়ে থাক।
ট্রেইলারে বিদেশের কিছু দৃশ্য দেখা গেছে। পিপলুর বক্তব্য, ‘৭৫-এর পর শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা জার্মানিতে ছিলেন। সেই সময়ের কথা বলতেই বিদেশের দৃশ্য রাখা হয়েছে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানাসহ বঙ্গবন্ধুর পরিবার নিয়ে নির্মিত হয়েছে ডকুমেন্টারি ফিল্ম ‘হাসিনা : অ্যা ডটার’স টেল’। এখানে একেবারেই পাওয়া যাবে না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। বরং বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা তাদের বাবাকে কীভাবে দেখেছেন, কেমন ছিল সেই দিনগুলো, সেই কথাই বলা হয়েছে ডকুমেন্টারিটিতে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনে প্রকাশ পেয়েছিল ছবির প্রথম ঝলক। ২১ অক্টোবর রাতে প্রকাশ পায় তথ্যচিত্রটির একটি গান। ‘আমার সাধ না মিটিল, আশা না ফুরিল, সকলই ফুরায়ে যায় মা’ শিরোনামের গানটির সঙ্গে ব্যবহার করা হয়েছে টুঙ্গিপাড়া বিভিন্ন দৃশ্য।
কিন্তু কেন এই গানটি ব্যবহার করা হল? উত্তর পাওয়া যায় গানের প্রথম অংশেই। নেপথ্য কণ্ঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলছেন, ‘বাবা করাচি থেকে ঢাকা ফিরে এলেন। তখন এই গানটা, পান্না লালের গাওয়া ‘‘আমার সাধ না মিটিল, আশা না ফুরিল, সকলই ফুরায়ে যায় মা’’ বারবার শুনে যাচ্ছেন, বারবার শুনে যাচ্ছেন।’
নতুন করে গানটির সংগীতায়োজন করা হয়েছে। কলকাতার দ্বেবজ্যোতি মিশ্র নতুন করে গানটির সংগীতায়োজন করেছেন এবং গেয়েছেনও। গানটির পাশাপাশি গানের মধ্যেই তিনবার আছে শেখ হাসিনার কণ্ঠ।
দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী বলছেন, ‘টুঙ্গিপাড়া আমার খুবই ভালো লাগে, ভীষণ ভালো লাগে। এখানে এলেই আমার মনে হয় আমি মাটির কাছে ফিরে এসেছি, আমি আমার মানুষের কাছে ফিরে এসেছি। আমার তো মনে হয় টুঙ্গিপাড়া পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর জায়গা।
ভিডিওটির একদম শেষ ভাগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কথা বলেছেন তার নিজেকে নিয়ে। তিনি বলেছেন, ‘আমি আমার কোনো স্মৃতি রাখতে চাই না। এগুলো অপাংক্তেও, প্রয়োজন নাই। এটা হলো একদম রূঢ় বাস্তবতা।’
তবে এখন অপেক্ষা পুরো ছবিটি দেখার। রাজধানী ও চট্টগ্রামে ছবিটি দেখার পর দর্শকদের চাহিদা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন এলাকায় দেখানো হবে ছবিটি।