মার্কিন কমিক লেখক স্ট্যান লি ৯৫ বছর বয়সে মারা গেছেন। তিনি আয়রনম্যান, দ্য ফ্যান্টাস্টিক ফোর, স্পাইডারম্যান, ডেয়ারডেভিল ও এক্সম্যানের সহলেখক ছিলেন।
জ্যাক কিরবি, স্টেভ ডিটকোর মতো শিল্পীদের সঙ্গে মিলে তিনি কমিক শিল্পকে নতুন করে জাগিয়ে তুলেছিলেন। বিভিন্ন সুপারহিরো চরিত্র দিয়ে তিনি জটিল আবেগী জীবনকে রোমাঞ্চে ভরিয়ে তুলেছিলেন।
সোমবার স্ট্যান লির মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করে তার মেয়ে জেসি লি বলেন, আমার বাবা তার সব ভক্তকে ভালোবাসতেন। তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ ও সবচেয়ে শালীন মানুষ ছিলেন।
স্ট্যান লি দীর্ঘদিন ধরে নিউমোনিয়া ও চোখের সমস্যাসহ বেশ কয়েকটি অসুখের সঙ্গে লড়াই করছিলেন। এর পর সোমবার সিডারস-সিনাই মেডিকেল সেন্টারে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
১৯২২ সালে নিউইয়র্ক শহরের এক নিম্নবিত্ত পরিবারে জন্ম হয় সৌভাগ্য বিশ্বাস করা লির। বাবা জ্যাক লিয়েবার ছিলেন দর্জি। তবু থেমে না থেকে নিজেকে এগিয়ে নেন সামনের দিকে।নাম লেখান পৃথিবীর সফল ব্যক্তিদের তালিকায়।
একজন লেখক ও সম্পাদক হিসেবে একই সময় তিনি অনেক গল্প তৈরির দায়িত্বে ছিলেন। লি সেসব গল্পকে ধারাবাহিক কাল্পনিক বিশ্বে রূপ দিয়েছিলেন। তার একেকটি গল্প যেন একেকটি রহস্যময় জগত।
যেখানে আয়রনম্যানকে ফ্যান্টাস্টিক ফোরের সঙ্গে যুক্ত করা যাবে, আবার ডক্টর স্ট্রেঞ্জারের মধ্যে ক্যাপ্টেন আমেরিকা নিজেকে একজন বিয়ের অনুষ্ঠানের অতিথি হিসেবে খুঁজে পেতে পারেন।
মার্ভেল আমেরিকাকে তিনি কমিক বইয়ের পাতা থেকে টেলিভিশনের ধারাবাহিক ও চলচ্চিত্রে রূপ দিয়েছেন। গণসংস্কৃতির চেহারা বদলে দিয়ে সেটিকে চলচ্চিত্রের সঙ্গে খাপখাইয়ে নিয়েছেন।
জেসি লি বলেন, ভক্তদের জন্য নতুন কিছু তৈরি করতে তারা বাবা নিজের ভেতরে এক ধরনের বাধ্যবাধকতা অনুভব করতেন। সে কারণেই তিনি অনবরত লিখে গেছেন।
তবে স্ট্যান লি শৈশব কেটেছিল ব্যাপক বিষাদ ও দুশ্চিন্তার মধ্যে। নিজের আত্মজীবনীতে তিনি লিখেছেন- বাবা কীভাবে একটি স্থায়ী চাকরির জন্য লড়াই করে গেছেন, যা তাকেও সারাজীবনের জন্য আক্রান্ত করে রেখেছিল।
তিনি লিখেছেন-তার কাছে মনে হয়েছে, একজন মানুষের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল একটি কাজের জন্য কোনো কিছু করা, প্রয়োজনের খাতিরে নিজেকে সর্বদা ব্যস্ত রাখা।
১৭ বছর বয়সে স্ট্যান লি তার এক আত্মীয় মার্টিন গুডম্যানের একটি প্রকাশনায় চাকরি নেন। তখন থেকে তিনি সুপারহিরো ও রহস্যময় চরিত্রগুলো নিয়ে পাণ্ডুলিপি লিখতে শুরু করেন।