তুরস্কে নিজ দেশের কন্স্যুলেটে সৌদি আরবের সাংবাদিক জামাল খাশোগি ‘হত্যাকাণ্ডে’ জড়িত থাকার সন্দেহভাজন হিসেবে দেশটির ১৮ নাগরিকের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে জার্মানি। এর আওতায় রয়েছে ইউরোপের পাসপোর্ট-ফ্রি শেনজেন জোনের ২৬ দেশে তাদের ভ্রমণ নিষিদ্ধ থাকবে। এ জোনে আছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ২২ দেশ এবং এর বাইরের চার দেশ।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) শেনজেন অঞ্চলে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে বলে খবরে বলা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে খাশোগি হত্যাকাণ্ডে সোমবার (১৯ নভেম্বর) নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করলো জার্মানি।
গত মাসে দেশটি সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে ইইউভুক্ত দেশগুলোর কাছে আহ্বান জানায় দেশটি।
নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ক্রিস্টোফার বার্গার বলেন, আমরা আমাদের ফরাসি ও ব্রিটিশ বন্ধুদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয় করেছি। জার্মানিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে শেনজেন সিস্টেম ডাটাবেজের মধ্যে তাদের (সৌদি আরবের ১৮ নাগরিক) নামের পাশে জার্মানিতে প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা জারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বলছে, এই নিষেধাজ্ঞা ইঙ্গিত দেয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় দেশ হিসেবে এ ইস্যুর প্রভাব মোকাবেলায় প্রস্তুত বার্লিন। একই সঙ্গে এই নিষেধাজ্ঞা ইইউভুক্ত ২৬ দেশের শেনজেন অঞ্চলে বাস্তবায়নে চাপ প্রয়োগ করতে পারে।
শেনজেন অঞ্চলে নিরাপত্তা হুমকি মনে করলে ইইউভুক্ত যেকোনো দেশ এককভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে। এই জোটে ফ্রান্স থাকলেও ব্রিটেন বেরিয়ে গেছে।
এদিকে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক একটি সংবাদসংস্থা একটি মরদেহের কয়েক টুকরো ছবি প্রকাশ করেছে। সংবাদমাধ্যমের দাবি, এসব টুকরো ইস্তাম্বুলে সৌদি আরবের কন্স্যুলেটে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া সৌদি সাংবাদিক খাশোগির। কন্স্যুলেটের এলাকার বাগান থেকে এসব টুকরো পাওয়া গেছে।
একই সঙ্গে এ হত্যাকাণ্ডের অডিও টেপ শুনতে রাজি হননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। টেপটিকে ভয়াবহ উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, আমি জেনেছি এখানে কী আছে? এই দুঃসহ ও পীড়াদায়ক টেপ শুনতে চাই না।
এর আগে গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কন্স্যুলেটে গিয়ে নিখোঁজ হন সাংবাদিক জামাল খাশোগি। এরপর থেকেই নিখোঁজ হন তিনি।
কন্স্যুলেটের বাইরে অপেক্ষামান খাশোগির প্রেমিকা বিষয়টি থানায় অবহিত করলে বিষয়টি জানাজানি হয়। তখনই খবর প্রকাশিত হয় সৌদি আরক খাশোগিকে হত্যা করা হয়েছে।
প্রথমে বিষয়টি অস্বীকার করলেও পরবর্তীতে সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, কন্স্যুলেটের কর্মকর্তাদের সঙ্গে হাতাহাতিতে খাশোগি নিহত হয়েছেন।
পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামে তুরস্কের গোয়েন্দা সংস্থা। এরপর আস্তে আস্তে সবেই স্বীকার করে নেয় সৌদি আরব।