একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৬ (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) আসনের আসনের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাওয়া বিকল্পধারার প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বি চৌধুরীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা শমসের মবিন চৌধুরীর গাড়িতে লাথি মেরেছেন বিএনপির এক সমর্থক।
বুধবার বিকালে মনোনয়ন জমা দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পথে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। গাড়িতে হামলার আগে সেখানে উপস্থিত বিএনপি সমর্থকরা শমসেরবিরোধী স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করেন। এর আগে সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা কাজী এমদাদুল ইসলামের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন শমসের মবিন।
এ সময় শমসের মবিন উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, আমি আশাবাদী- এই আসনে আমাকে মনোনয়ন দেয়া হবে। এনিয়ে মহাজোটের মধ্যে আলাপ-আলোচনা চলছে। আশা করি, শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ এই আসনটি ছেড়ে দেবে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করে সম্প্রতি সাবেক রাষ্ট্রপতি একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বিকল্পধারায় যোগ দেন শমসের মবিন।
উল্লেখ্য, একজন কূটনীতিক এবং সেনা অফিসার থেকে বিএনপির রাজনীতিতে শমসের মবিন চৌধুরীর উত্থানটা ছিল বেশ নাটকীয়। বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীর জোট সরকারের আমলে তিনি পররাষ্ট্র সচিব ও ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বপালন করেছিলেন। অবসরে গিয়ে বিএনপিতে যোগ দেয়ার পর দলে দ্রুত বড় পদ পান।
শমসের মবিন সরকারের চাপে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে বলেন, সরকারের চাপ থাকলে তো অনেক আগেই থাকত। এটা নিতান্তই আমার একান্ত ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই আমি এই পদক্ষেপ নিয়েছি।
বিকল্পধারায় যোগ দেয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে শমসের মবিন চৌধুরী জানান, সাবেক প্রেসিডেন্ট বদরুদ্দোজা চৌধুরীর সঙ্গে তার ব্যক্তিগত পরিচয় ছিল এবং তার সঙ্গে গত কিছুদিন ধরে কথাবার্তা চলছিল। উনি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব। উনার অনেক কিছুর সঙ্গে, নীতির সঙ্গে, আদর্শের সঙ্গে, কথাবার্তার সঙ্গে আমার মিলে যায়। তো মতের মিল থাকাতে, মনে হলো একটা চেষ্টা করে দেখি। সেই কথা ভেবেই আমি আনুষ্ঠানিকভাবে বিকল্পধারা বাংলাদেশে যোগ দিয়েছি।
কিন্তু বিএনপির সঙ্গে তার কোনো মতপার্থক্য হয়েছিল কিনা তা জানতে চাইলে শমসের মবিন বলেন, মতবিরোধ কিছুটা তো অবশ্যই ছিল। যেমন সাম্প্রদায়িক রাজনীতির প্রশ্নে। আমি আশা করেছিলাম যে, বর্তমান বাংলাদেশের কথা চিন্তা করে বিএনপি তার কাজেকর্মে এবং তার অবস্থানে আরেকটু অসাম্প্রদায়িকতার দিকে চলে আসবে। সেসব বিষয়ে আমি বাধা পাচ্ছিলাম। আমার মনের মতো হচ্ছিল না। দ্বিতীয়ত নাশকতার রাজনীতিতে আমি মোটেও বিশ্বাস করি না। সেটা সব ধরনের নাশকতা। পেট্রলবোমা দিয়ে পুড়িয়ে মারা হোক, বা লগি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে মারা হোক।