জার্মানির বার্লিনে গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত জাতীয় ইসলামিক সম্মেলনে শূকরের সসেজ পরিবেশন করা হয়। এটাকে অন্য ধর্মের প্রতি সহিষ্ণুতাবিরোধী এবং অসম্মান প্রদর্শন হিসেবে মন্তব্য করছেন অনেকে। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হোর্স্ট সেহোফার এজন্য ক্ষমা চেয়েছেন। তবু যেন থামছে না নিন্দার ঝড়।
গত বুধবার সন্ধ্যার খাবার তালিকায় অন্যান্য খাবারের সঙ্গে ছিল শূকরের রক্তের সসেজ, শূকরের মাংস এবং বেকন।
এই বিষয়ে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, ওই সন্ধ্যায় বিভিন্ন দেশের ইসলামিক সংগঠনের নেতাদের পাশপাশি জার্মান সরকারের কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় কর্মকর্তারাও ছিলেন। তাদের কথা মাথায় রেখেই অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি এগুলো রাখা হয়েছিল।
আরও বলা হয়, সেদিন সন্ধ্যায় ‘বুফে’ ছিল, যেখানে বিশাল খাদ্যসম্ভারের মধ্যে ছিল শাকসবজি, মাছ, মাংস এবং হালাল অন্যান্য মাংস। এরপরও যদি কিছু শূকরের মাংস থাকার কারণে কারও অনুভূতিতে আঘাত লাগে, তবে সেজন্য আমরা দুঃখিত।
তবে অনেকেই মনে করছেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হোর্স্ট সেহোফার কট্টরপন্থী হওয়ায় তার সিদ্ধান্তেই ব্লাড সসেজ পরিবেশন করা হয়। চলতি বছরের মার্চেই ‘জার্মানিতে ইসলামের ঠাঁই নেই’ বলে কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।
এই বিষয়ে তুর্কি-জার্মান সাংবাদিক টুনকে ওজদামার টুইটারে লিখেছেন, যেসব মুসলমান শূকর খান না, তাদের প্রতি সামান্য সম্মান দেখানো অগ্রহণযোগ্য নয়। আমি নিজেও শূকরের মাংস খাই। জার্মানিতে অনেক সম্প্রদায়ের মানুষের বাস। তাই যেসব স্কুলে মুসলিম শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছে, সেখানে শূকরের মাংস পরিবেশনে আমি খারাপ কিছু দেখি না।
কিন্তু একটি ইসলামিক সম্মেলনে, যেখানে মুসলমানদের বিভিন্ন আলোচনায় অংশ নিতে ডেকে আনা হয়েছে, ধর্মীয় নানা কারণে সৃষ্ট প্রতিদিনের সমস্যা সমাধানের জন্য যাদের কাছে আপনারা পরামর্শ চাইছেন, তাদের অনুভূতির প্রতি আপনাদের সম্মান দেখানো উচিত ছিল বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে কট্টরপন্থী দল অলটারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি) জার্মান সংস্কৃতির ওপর হামলার কারণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দায়ী করেছে।টুইটারে এএফডি’র আইন প্রণেতা আলিসে ভাইডেল লিখেছেন, ব্লাড সসেজ হলো জার্মানির সুস্বাদু খাবার। এটা আমাদের সংস্কৃতির অংশ। এটাকে মেনে নেয়াটাই সহিষ্ণুতার পরিচয়। আমাদের দৈনন্দিন জীবন থেকে আমরা এগুলো ত্যাগ করতে পারি না।
প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালের ইসলামিক সম্মেলনেও শূকরের মাংস পরিবেশন করা হয়েছিল।