যুদ্ধ ও সংঘাতের সময় যৌন সহিংসতা থেকে নারীদের সুরক্ষায় বিশ্বের কাছে আবেদন জানিয়েছেন এ বছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জয়ী ডেনিস মুকওয়েগি ও নাদিয়া মুরাদ।
সোমবার নরওয়ের অসলোতে নোবেল পুরস্কার গ্রহণের সময় নিজেদের বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তারা।
বক্তব্যে নারী ও শিশুদের ওপর যৌন সহিংসতায় বিশ্ব সম্প্রদায়ের উদাসীনতার সমালোচনাও করেছেন। খবর এএফপির।
সংঘাতকালে ধর্ষণের শিকার নারীদের চিকিৎসায় পারদর্শিতার জন্য বিশজুড়ে এখন খ্যাত কঙ্গোর নাগরিক ও নারীরোগ বিশেষজ্ঞ মুকওয়েগি। অন্যদিকে ইরাকে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের হাতে নিজেই যৌন সহিংসতার শিকার নাদিয়া মুরাদ ধর্ষিত নারীদের পক্ষে কথা বলে খ্যাতি কুড়িয়েছেন।
মুকওয়েগির সঙ্গে ২০১৮ সালের শান্তিতে নোবেল পান ইরাকের এ কুর্দি মানবাধিকারকর্মী। অসলোতে পুরস্কার গ্রহণের পর তারা উভয়েই বলেছেন, ধর্ষণের শিকারিরা সবসময় অবমাননার শিকার হন। এবং কখনও কখনও কম মূল্যায়ন করা হয়।’
ধর্ষিত নারীদের প্রতি আরও মানবিক ও সহানুভূতিশীল হওয়ার আবেদন জানিয়েছেন তারা।
মুকওয়েগি বলেন, ‘আমাদের যদি যুদ্ধ করতেই হয়, সেটা হবে উদাসীনতার বিরুদ্ধে। এটাই আমাদের সমাজকে কুরে কুরে খাচ্ছে।’ মানবতা ও মানবাধিকারের কথা বলে যারা মুখে ফেনা তুলে ফেলে তাদের সমালোচনার তীরে বিদ্ধ করে নাদিয়া এখনও যে সব নারী ও শিশু আইএসের হাতে বন্দি তাদের মুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
ডেনিস মুকওয়েজি তার জীবনের বড় একটি সময় ব্যয় করেছেন কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে যৌন সহিংসতার শিকার মানুষের সাহায্যার্থে। যৌন নির্যাতনের শিকার হাজার হাজার রোগীর চিকিৎসা করেছেন তিনি।
অপরদিকে ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় ছোট্ট গ্রাম কোচোতে পরিবারের সঙ্গেই থাকতেন ইয়াজিদি তরুণী নাদিয়া মুরাদ।
২০১৪ সালে আইএস ঢুকে পড়ে ওই গ্রামে। গ্রামের সবাইকে অস্ত্রের মুখে একটি স্কুলে ঢোকানো হয়। এর পরই মুহুর্মুহু গুলিতে নাদিয়ার ছয় ভাইসহ সব পুরুষকে হত্যা করা হয়। পুরুষদের হত্যা করার পর আইএস জঙ্গিরা নাদিয়া ও অন্য নারীদের একটি বাসে করে মসুল শহরে নিয়ে যায়। সেখানে যৌনদাসী হিসেবে বিক্রি হন নাদিয়াও।