একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া বিএনপির চার উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচন কমিশন থেকে বৈধতা পেলেও তিনজনের প্রার্থিতা সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে আটকে গেছে।
এ ছাড়া মানিকগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী আফরোজা খান রিতার মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনের দেয়া সিদ্ধান্ত স্থগিত করে হাইকোর্টের দেয়া স্থগিতাদেশের ওপর ‘নো অর্ডার’ আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
সোমবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের সাত সদস্যের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এদিকে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান খন্দকার আবু আশফাক এবং বগুড়ায় গাবতলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোরশেদ মিলটনের মনোনয়নপত্র স্থগিত করে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
এ সংক্রান্ত আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এ নিয়ে পাঁচ উপজেলা চেয়ারম্যান ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ফলে এসব আসনে ধানের শীষের প্রার্থীশূন্য হয়ে পড়েছে।
বিএনপির পাঁচ উপজেলা চেয়ারম্যানরা হলেন- ঢাকা-২০ আসনে বিএনপির প্রার্থী ধামরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তমিজ উদ্দিন, মানিকগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী আফরোজা খান রিতা, বগুড়া-৩ আসনের প্রার্থী আদমদিঘী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মোহিত তালুকদার, বগুড়া-৭ আসনের প্রার্থী শাহজাহানপুর উপজেলা চেয়ারম্যান সরকার বাদল ও গাবতলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোরশেদ মিলটন এবং ঢাকা-১ আসনের বিএনপির প্রার্থী নবাবগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান খন্দকার আবু আশফাক ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না।
তমিজ উদ্দিনের মনোনয়নপত্র নির্বাচন কমিশন বৈধ ঘোষণা করলেও হাইকোর্ট তা স্থগিত করেছিল। কিন্তু তার আবেদনে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে দিয়েছিল চেম্বার আদালত।
প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে সাত বিচারকের আপিল বেঞ্চ সোমবার চেম্বার আদালতের স্থগিতাদেশ তুলে নিয়েছে। ফলে হাইকোর্টের আদেশই বহাল থাকছে এবং তমিজ উদ্দিন নির্বাচন করতে পারছেন না।
বগুড়ার মোহিত তালুকদার এবং সরকার বাদলের মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত হাইকোর্ট স্থগিত করায় তাদের ভোটের আশা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু হাইকোর্টের ওই আদেশ চেম্বার আদালতে স্থগিত হয়ে যায়। আপিল বিভাগ সোমবার ওই স্থগিতাদেশ চলমান রেখেছে।
ঢাকা-১ আসনের বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী নবাবগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান খন্দকার আবু আশফাকের মনোনয়নপত্র নির্বাচন কমিশনে পেলেও হাইকোর্ট সোমবার তা স্থগিত করে দিয়েছে।
এ আসনে কুলা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা বিকল্পধারার জালাল উদ্দিনের করা রিট শুনানি নিয়ে সোমবার বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার শামীম আহমেদ মেহেদী ও ব্যারিস্টার আব্দুল কাইয়ুম।
আদালতের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যানের পদত্যাগ গৃহীত হওয়ার আগেই তিনি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। যদিও নির্বাচন কমিশন তার মনোনয়নপত্র বৈধ করেছিল। নির্বাচন কমিশনের এ সিদ্ধান্ত হাইকোর্ট স্থগিত করেছেন।
ব্যারিস্টার আব্দুল কাইয়ুম বলেন, কমিশনের এ সিদ্ধান্ত স্থগিত হওয়ায় তিনি আর আপাতত নির্বাচন করতে পারছেন না।