মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গদের বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযানকে ‘গণহত্যা’হিসেবে আখ্যা দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন সিনেটরদের একটি গোষ্ঠী।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওকে দেওয়া এক চিঠিতে তারা এ আহ্বান জানান।
গত বছর মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েকটি সীমান্ত চৌকিতে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা হামলা চালানোর পর রোহিঙ্গাদের গ্রামে গ্রামে কঠোর অভিযান শুরু করে দেশটির সামরিক বাহিনী। এ দমনাভিযানের মুখে গত বছরের আগস্ট থেকে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।
মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর এ দমনাভিযানকে জাতিগত নির্মূল অভিযান বলে বর্ণনা করেছে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অন্যান্যরা।
যদিও তাদের এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে মিয়ানমার।
মার্কিন সিনেটরদের ওই দলটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেওর কাছে পাঠানো চিঠিতে বলেছেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব প্রতিবেদনে গণহত্যার পরিষ্কার প্রমাণ উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও মন্ত্রণালয় গণহত্যার অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলে দৃঢ় আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত না নেয়ায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর পদক্ষেপ নিয়ে একটি আনুষ্ঠানিক অবস্থান নেয়ার জন্য পম্পেওর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ওই সিনেটররা।
চিঠিতে বলা হয়েছে, সন্ত্রাস ছড়ানো, তাড়িয়ে দেওয়া এবং রাখাইনের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নির্মূল করা-উত্তর রাখাইন রাজ্যের এসব সহিংসতা কোনো প্রশ্ন ছাড়াই গণহত্যার সংজ্ঞার সঙ্গে খাপ খায়।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর ওই পদক্ষেপকে আনুষ্ঠানিকভাবে গণহত্যা আখ্যা দিতে ব্যর্থ হওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য ‘সত্য বলা ও দায়িত্ব’অস্বীকার করা হবে। একই সঙ্গে এটি মানবাধিকার, মর্যাদা ও জবাবদিহিতার প্রচার ও এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে মার্কিন জাতির উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে ‘কলঙ্কা লেপন’করা হবে।
এই চিঠিতে যারা স্বাক্ষর করেছেন তাদের অন্যতম হচ্ছেন সিনেটের ফরেন রিলেশন্স কমিটির প্রধান ডেমোক্রেট সিনেটর বব মেনেনডেজ, রিপাবলিকান সিনেটর মার্কো রুবিও ও সুসান কলিন্স এবং ডেমোক্রেট সিনেটর এড মার্কি, টিম কেইন, বেন কার্ডিন ও জেফ মার্কলি।
এর আগে গত সেপ্টেম্বরে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটিও মিয়ানমারের সামরিক অভিযানকে ‘গণহত্যা’হিসেবে ঘোষণা দেয়ার জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল।