জার্মানির রাজধানী বার্লিনের গেসুন্ড ব্রুনেন এলাকায় তমালিকা সিংহ নামে এক বাংলাদেশি ব্লগারের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। অর্পিতা রায়চৌধুরী নামে তিনি লেখালেখি করতেন।
তবে ঠিক কী কারণে তার মৃত্যু হয়েছে, তা জানা যায়নি।
লেখকদের সংগঠন পেন জার্মানির উদ্যোগে বার্লিনে আশ্রয় নেয়া তমালিকা সিংহ ব্লগার হিসেবে স্থানীয় বাঙালি কমিউনিটিতে পরিচিত ছিলেন।
দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিজের আবাসস্থলের গোছলখানা থেকে তার নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়।
তমালিকার পরিবার চাইলে মরদেহ দেশে নেয়ার ব্যাপারে সহায়তার আশ্বাসও দিয়েছে দূতাবাস।
পেন জার্মানিও তমালিকার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে। তবে ঠিক কী কারণে তার মৃত্যু হয়েছে, সে সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি পেন জার্মানির মুখপাত্র ফিলিক্স হিলে।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের নির্বাসিত লেখক ফেলো অর্পিতা রায়চৌধুরীর (ছদ্মনাম) মৃত্যুতে অত্যন্ত শোকাহত।
‘যেহেতু পুলিশের তদন্ত এখনও অব্যাহত রয়েছে, তাই এ বিষয়ে আমরা আর কোনো মন্তব্য করতে পারছি না।’
বাংলাদেশি আরেক ব্লগার জোবায়েন সন্ধি ও তমালিকা সিংহ কাছাকাছি ভবনে থাকতেন। তিনি বলেন, সর্বশেষ ১২ ডিসেম্বর তাদের কথা হয়েছিল।
জানা গেছে, অর্পিতার এক বাংলাদেশি প্রতিবেশী কয়েক দিন ধরে তার বাড়িতে বাতি জ্বলতে দেখেননি। পরে ১৪ ডিসেম্বর তিনি পেন ক্লাবের স্থানীয় কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানান।
এর চার দিন পর মঙ্গলবার বার্লিন পেন ক্লাবের একজন স্বেচ্ছাসেবক ওই বাড়ির অন্য একটি চাবি দিয়ে দরজা খুলে ঢুকে অর্পিতার লাশ পড়ে থাকতে দেখেন।
মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে তার লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায় জার্মানির পুলিশ।
পেন জার্মানির ওয়েবসাইটে তাকে ব্লগার ও অ্যাকটিভিস্ট হিসেবে পরিচয় দেয়া হয়েছে। ১৯৯৫ সালে অর্পিতার জন্ম। ২০১২ সালে থেকে নারী, শিশু ও সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে তিনি ফেসবুক এবং বাংলা ব্লগে লেখালেখি করতেন।
২০১৭ সালে এক্সাইল বা নির্বাসন কর্মসূচির জার্মান রাইটার্সের ফেলো হিসেবে তাকে বার্লিনে আমন্ত্রণ জানানো হয়। দীর্ঘ ভিসা কার্যক্রম শেষে একই বছরের ডিসেম্বরে তিনি জার্মানিতে পাড়ি জমান।
উল্লেখ্য, পেন জার্মানি এ পর্যন্ত বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি ব্লগার এবং লেখককে জার্মানিতে নির্বাসিত জীবনযাপনে সহায়তা করেছে। তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন- প্রয়াত লেখক হুমায়ুন আজাদ।