সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের আকস্মিক সিদ্ধান্ত মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রধান খবর হিসেবে স্থান পেয়েছে। বেশিরভাগ সংবাদমাধ্যম এ সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানালেও কিছু কিছু সংবাদমাধ্যম একে ভালোভাবে নেয়নি।
তবে অনেক সংবাদমাধ্যমই মার্কিন সিনেটর লিণ্ডসে গ্র্যায়ামের এ সিদ্ধান্তকে সমালোচনা করে যে মন্তব্য করেছেন, তা বিশেষভাবে উল্লেখ করেছে। যেখানে তিনি বলেছেন-আমেরিকার এ পদক্ষেপ ওই অঞ্চলে রাশিয়া ও ইরানের অবস্থান আরও শক্ত করবে।
অবশ্য ইরানের সম্প্রচার মাধ্যমগুলো এ খবর মোটামুটি নিরপেক্ষভাবে প্রচার করেছে। আর রক্ষণশীল সংবাদপত্রগুলো এ পদক্ষেপকে আমেরিকান সরকারের পরাজয় হিসেবে তুলে ধরে উল্লাস প্রকাশ করেছে।
হেমায়াত সংবাদমাধ্যম এ সিদ্ধান্তকে বিপর্যয়কারী প্রত্যাহার বলে বর্ণনা করেছে।
কট্টরপন্থী দৈনিক জাভান যেটি প্রভাবশালী ইসলামিক রেভলিউশন গার্ড কোরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত; তারা বলছে-সিরিয়ার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে এ সপ্তাহের গোড়ার দিকে রাশিয়া, তুরস্ক ও ইরানের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছে, সেটি মেনে নেয়া ছাড়া আমেরিকার সামনে এখন আর কোনো বিকল্প নেই।
তুরস্কের সংবাদমাধ্যম অবশ্য দাবি করেছে- তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে এক টেলিফোন কথোপকথনের সময় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
কুর্দি টিভির খবরে অবশ্য বলা হয়েছে-আমেরিকান সৈন্য এখনও দেশটিতে রয়েছে।
কুর্দি টিভির মতো রুড টিভি চ্যানেলও জোর দিয়ে বলছে-সিরিয়া ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেসের (এসডিএফ) নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকাগুলোর কাছে আমেরিকান সৈন্যরা এখনও অবস্থান করছে।
সিরিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা সানা এ খবর দিয়েছে দীর্ঘ পরিসরে। রাশিয়া এ সিদ্ধান্তকে যে স্বাগত জানিয়েছে, সেটিকে বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়েছে এবং রুশ সরকারের মন্তব্য উদ্ধৃত করে তারা লিখেছে- ওয়াশিংটন বুঝতে পারছে সিরিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যে উদ্যোগ চলছে তার বিরোধিতা আমেরিকার স্বার্থের পরিপন্থী হচ্ছে।
আরবের পত্রপত্রিকাগুলোতেও এ খবর উল্লেখযোগ্যভাবে স্থান পেয়েছে। অনেকেই এ সিদ্ধান্তকে ব্যাখ্যা করেছে 'বিস্ময়কর' ও 'স্তম্ভিত হওয়ার মতো' বলে।
লণ্ডনভিত্তিক দৈনিক আল-আরব এটিকে বলছে- 'তুরস্ক, ইরান, রাশিয়া এও আসাদের বিজয়।'
আলজাজিরা এ সিদ্ধান্তকে রাজনৈতিক সমাধানের পথে একধাপ অগ্রগতি হিসেবে উল্লেখ করেছে।