একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে সোমবার মাঠ পর্যায়ে সেনাবাহিনী নামছে।সোমবার রাত ১২টা থেকে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ৪০৭ উপজেলায় স্বশস্ত্র বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। এর মধ্যে ৩৮৯ উপজেলায় সেনাবাহিনী এবং ১৮ উপজেলায় নৌবাহিনী টহল দিবে।
প্রতি জেলায় এক ব্যাটেলিয়ন করে ৩০ হাজারেরও বেশি স্বশস্ত্র বাহিনী থাকবে। তারা ২৪ ডিসেম্বর থেকে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত মাঠে থাকবে।
রোববার (২০ ডিসেম্বর) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এ তথ্য গণমাধ্যমকে জানিয়েছে।
রোববার বিকেল থেকে সেনারা অস্থায়ী ক্যাম্পে পৌঁছাতে শুরু করেছে।
নির্বাচনে ‘ইনস্ট্রাকশন রিগার্ডিং ইন এইড টু দ্য সিভিল পাওয়ার’ অনুযায়ী কাজ করবেন সশস্ত্র বাহিনীর এই সদস্যরা। তারা জেলা/উপজেলা/মহানগর এলাকার সংযোগস্থলে ও অন্যান্য সুবিধাজনক স্থানে অবস্থান করবেন। তারা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রয়োজন অনুযায়ী টহল ও অন্যান্য আভিযানিক কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন।
গত বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করা হয়।
পরিপত্রে সশস্ত্র বাহিনীর কর্মপরিধিতে বলা হয়েছে-নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা সহায়তা চাইলে আইনশৃঙ্খলা বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে পুলিশসহ অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে তারা সহায়তা করবেন।
পাশাপাশি রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজন অনুযায়ী উপজেলা/থানায় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগ দেয়া হবে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা বা প্রিসাইডিং কর্মকর্তার চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ভোটকেন্দ্রের ভেতরে বা ভোট গণনাকক্ষের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করবেন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। তবে সেনাবাহিনী বিচারিক ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন না। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবেন।
যে কোনও অবৈধ সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করতে সশস্ত্র বাহিনীকে ডাকা হলে, তারা ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৭ থেকে ১৩২ ধারা অনুযায়ী কাজ করবেন। এ ক্ষেত্রে অন্য কোনও উপায়ে বেআইনি সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করা না গেলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার জন্য সামরিক শক্তি প্রয়োগ ও গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিতে পারবেন। সেই অনুযায়ী তারা ব্যবস্থা নেবেন।
জরুরি পরিস্থিতিতে যদি কোনও ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব না হয়, সে ক্ষেত্রে কমিশন্ড অফিসার সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার জন্য সামরিক শক্তি প্রয়োগ এবং গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দিতে পারবেন।
যে কোনও অপ্রীতিকর কিছু ঘটনার আশঙ্কায় সামরিক শক্তি প্রয়োগের জন্য ম্যাজিস্ট্রেটকে লিখিত নির্দেশ দেয়ার বাধ্যবাধকতা না থাকলেও মৌখিক নির্দেশ দেয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব তা লিখিত আকারে দেবেন।
এদিকে ইতোমধ্যে দেশব্যাপী এক হাজার ১৬ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ(বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে। তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে প্রস্তুত রয়েছে এক হাজার ১৬ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্য। এর মধ্যে ঢাকায় থাকছে ৫০ প্লাটুন। গেল মঙ্গলবার পিলখানা থেকে বিজিবি সদস্যদের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়। বিজিবি সদস্যদের ২ জানুয়ারি পর্যন্ত মাঠে থাকার কথা রয়েছে। এদিকে পুলিশ, র্যাব, আনসারসহ আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর অতিরিক্ত সদস্যরা নিরাপত্তায় নিয়াজিত থাকবেন।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনেও তাদের একইভাবে মোতায়েন করেছিল ইসি। যদিও ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনে নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হিসেবে সেনা মোতায়েন করা হয়েছিল।