অত্যাধুনিক সব সুপার কম্পিউটার দিয়েও যেসব সমস্যার সমাধান করা যাচ্ছে না, তা অনায়াসে সমাধান করা সম্ভব হবে কোয়ান্টাম কম্পিউটারের মাধ্যমে। কিন্তু বাস্তবে বহু বছর ধরে কেবল গবেষণাগারের মধ্যেই সীমিত কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরির পরিকল্পনা। অবশেষে আইবিএমের কল্যাণে বিশ্ব প্রবেশ করল কোয়ান্টাম কম্পিউটারের যুগে।
আমেরিকার লাস ভেগাসে শুরু হওয়া কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স শো বা সিইএস মেলায় আইবিএম উন্মোচন করেছে বিশ্বের প্রথম কোয়ান্টাম কম্পিউটার। প্রতিষ্ঠানটি যদিও নিজেদের ব্যবহারের জন্য এটি তৈরি করেছে, তবে তাদের মতে প্রযুক্তি বিশ্বকে বদলে দেওয়ার পথে এটি প্রথম পদক্ষেপ।
প্রযুক্তি বিশ্বে বিপ্লব ঘটানোর প্রযুক্তিগুলোর মধ্যে কোয়ান্টাম কম্পিউটিংকে এখনো প্রাথমিক পর্যায়ের বলে মনে করা হয়। কারণ, খুব দ্রুত এটিকে বাণিজ্যিক ভাবে বাজারে নিয়ে আসা সম্ভব হবে না। আইবিএমের তৈরি বিশ্বের প্রথম কোয়ান্টাম কম্পিউটারের নাম হচ্ছে, ‘আইবিএম কিউ সিস্টেম ওয়ান’। যা কোয়ান্টাম কম্পিউটার বাজারে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে আইবিএমের প্রথম প্রচেষ্টা। বিস্ময়কর ক্ষমতার এই কম্পিউটারটি স্থাপন করা হয়েছে ৯ ফুট লম্বা ও ৯ ফুট প্রশস্ত কাচের আবরণের মধ্যে বায়ু নিরোধক পরিবেশে।
আইবিএমের কোয়ান্টাম রিসার্চের ডিরেক্টর এবং হাইব্রিড ক্লাউডের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অরভিন্দ্র কৃষ্ণা বলেন, ‘আইবিএম কিউ সিস্টেম ওয়ান হচ্ছে কোয়ান্টাম কম্পিউটার বাণিজ্যিক ভাবে তৈরির ক্ষেত্রে একটি বড় পদক্ষেপ। শিল্পক্ষেত্রে এবং বিজ্ঞানের জন্য কোয়ান্টাম কম্পিউটারকে গবেষণাগারের বাইরে নিয়ে আসার জন্য নতুন এই সিস্টেম পথপ্রদর্শক হবে।’
আগামী বছরে আইবিএম তাদের তৈরি কোয়ান্টাম কম্পিউটারটি বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের সুবিধা দিতে নতুন একটি ল্যাব স্থাপন করবে বলে জানিয়েছে। ওই ল্যাবে আইবিএমের ক্লাউড ভিত্তিক কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের পাশাপাশি অন্যান্য উচ্চ-ক্ষমতার কম্পিউটিং সিস্টেমগুলো ব্যবহার করা যাবে।
বিশ্বে আইবিএম একমাত্র কোম্পানি নয়, যারা কোয়ান্টাম কম্পিউটিং বাজারে নিয়ে আসতে কাজ করছে। গুগল, ইন্টেল, মাইক্রোসফটসহ বিভিন্ন টেক জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান কার্যকর কোয়ান্টাম কম্পিউটার বাজারে নিয়ে আসতে কাজ করছে। অসম্ভব সব গবেষণা ও প্রযুক্তিগত উন্নতির দরজা খুলে দেবে অবিশ্বাস্য ক্ষমতার অধিকারী কোয়ান্টাম কম্পিউটার।