logo
আপডেট : 16 January, 2019 10:37
পার্লামেন্টে থেরেসা মের ব্রেক্সিট চুক্তি নাকচ
মেইল রিপোর্ট

পার্লামেন্টে থেরেসা মের ব্রেক্সিট চুক্তি নাকচ

ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের ব্রেক্সিট চুক্তিটি ২৩০ ভোটের বিশাল ব্যবধানে নাকচ করে দিয়েছেন ব্রিটিশ এমপিরা। এই প্রথম দেশটির কোন ক্ষমতাসীন সরকার পার্লামেন্টে এত বড় পরাজয়ের মুখোমুখি হলো।

পাঁচ দিন ধরে আলোচনার পর মঙ্গলবার রাতে যুক্তরাজ্য পার্লামেন্টের নিম্ন কক্ষ হাউস অব কমন্সে ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়। ৬৫০ সদস্যের পার্লামেন্টে প্রস্তাবটি বাতিলের পক্ষে ভোট দিয়েছেন ৪৩২ জন সংসদ সদস্য, যেখানে প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছেন মাত্র ২০২ জন।

ব্রেক্সিট ইস্যুতে অনুষ্ঠিত এ ভোটাভুটিতে ১১৮ জন সরকার দলীয় এমপিও বিরোধী দলের সঙ্গে থেরেসা মের চুক্তির বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।

ভোটের এই ফলাফলের কারণে অর্ধ শতকের মধ্যে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সঙ্কটে পড়া দেশটির অনিশ্চয়তা আরও বাড়াল। ২৯ মার্চের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার শর্ত নির্ধারণ করা হয়েছিল ওই চুক্তিতে।

ভোটের ফলের পর লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন বলেছেন, এটা সরকারের জন্য বিপর্যয়কর পরাজয়। তিনি এখন সরকারের বিরুদ্ধে একটি অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন, যা দেশটিতে একটি সাধারণ নির্বাচনে গড়াতে পারে। করবিন বলছেন, এই সরকারের পরিষ্কার অদক্ষতার ব্যাপারে কমন্স সদস্যদের মতামত জানানোর সুযোগ করে দেবে এই অনাস্থা ভোট।

অন্যদিকে থেরেসা মে জানিয়েছেন, এই প্রস্তাবের বিষয়ে বুধবার তিনি বিতর্কে অংশ নিতে পারেন।

তবে ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টির একটি সূত্র জানিয়েছে, অনাস্থা ভোটের ক্ষেত্রে তারা মেকে সমর্থন করবেন।

সংসদ সদস্যরা যদি তাকে সমর্থন করেন, তাহলে সরকার বা অন্য যে কেউ পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে পারবেন, তাদের পরবর্তী ১৪ দিনের মধ্যে আরেকটি আস্থা ভোটে বিজয়ী হতে হবে। সেটি না হলে দেশটিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

যুক্তরাজ্যে সাধারণত এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবের ওপর সরকারের বিশাল পরাজয়ের পর আশা করা হয় যে, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করবেন। তবে মে তা করছেন না। ভোটাভুটির পরপরই তিনি সরকার পরিচালনা অব্যাহত রাখার আভাস দিয়েছেন।

‘হাউজ তাদের মতামত দিয়েছে এবং সরকার সেটি শুনবে,’ সংসদ সদস্যদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেছেন। সব দলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ব্রেক্সিটের বিষয়ে করণীয় ঠিক করারও প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।

এখন থেরেসার সামনে দুটি পথ খোলা রয়েছে, একটি হল তিন দিনের মধ্যে পার্লামেন্টে নতুন আরেকটি চুক্তির খসড়া তোলা, অন্যটি হচ্ছে ইইউর দেওয়া চূড়ান্ত সময়সীমা ২৯ মার্চ থেকে আবার বাড়িয়ে নেওয়া। আর তা না হলে আগামী ২৯ মার্চ এক রাতেই ইউরোপের ২৭টি দেশের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে বড় ধরনের সঙ্কটে পড়তে হবে যুক্তরাজ্যকে।

২০১৬ সালের ২৩ জুন যুক্তরাজ্যে এক গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে দেশটির চার দশকের সম্পর্কোচ্ছেদের রায় হয়।

এদিকে ভোটের ফলাফলে হতাশা প্রকাশ করে ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক ব্রিটিশ সরকারের প্রতি যত দ্রুত সম্ভব ব্রেক্সিট প্রসঙ্গে তাদের পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়টি পরিষ্কার করার আহবান জানিয়েছেন।