সিরিয়ার শরণার্থীদের প্রশংসায় ভাসছে এরদোগানের দেশ তুরস্ক। শরণার্থীরা বলেছে, তুরস্ক আমাদের খুব ভালো দেখাশোনা করছে।
দেশটিরর গৃহযুদ্ধ ও ওয়াইপিজে বা পিকেকে সন্ত্রাসীদের কারণে শরণার্থীরা বাস্তুচ্যুত হয়েছে। তবে তারা বলছে, তুরস্ক তাদের সব ধরনের দেখাশোনা করছে।
সিরিয়ার সীমান্তবর্তী সানলুরফা প্রদেশের সুরুক জেলায় বিশাল টেন্ট সিটিতে শরণার্থীদের থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছে তুরস্ক। সেখানে তাদের প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে। সেখানে তাল আবায়াদ, রাস আল আয়ান ও আয়ান আল আরাবের (কোবানি) কয়েক হাজার নিপীড়িত বাসিন্দা থাকছেন। তাদের ওইসব এলাকা ওয়াইপিজে/পিকেকে সন্ত্রাসী দখল করে রেখেছে।
তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আনাদলু জানায়, আহমেদ সুলাইমান একজন সিরিয়ান কুর্দি যিনি আয়ান আল আরাব থেকে এসেছেন। এখন টেন্ট সিটিতে থাকেন। সুলাইমান জানান, যখন আমরা তুরস্কে আসি তখন আমাদের খুব ভালো লাগছিল। তারা আমাদের খুব সাহায্য করেছে।
সোলায়মান আরও বলেন, সরকার আমাদের খুব যত্ন করেছে। যদি আমরা তুরস্কে না আসতাম তাহলে আমরা ধ্বংস হয়ে যেতাম।
তিনি আরও জানান, তার দেশকে অনেক মিস করেন। যুদ্ধের শেষ দেখার জন্য তিনি উন্মুখ।
তিনি বলেন, সন্ত্রাসীরা আমার বাড়ি ধ্বংস করে দিয়েছে। আমি আমার এলাকা সন্ত্রাসীমুক্ত দেখতে চাই। তুরস্ক আমার এলাকা সন্ত্রাসমুক্ত করে নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ করতে পারে।
আহদা জামাল বলেন, তিনি তার সাত সন্তানকে নিয়ে ইদলিব থেকে পালিয়ে এসেছেন। এখন সন্তানরা নিরাপদে বড় হচ্ছে। তিনি বলেন, আমার সন্তানরা আবার তুরস্কে তাদের পড়াশোনা শুরু করেছে।
জামাল বলেন, আমি যদি সিরিয়ায় থাকতাম আমার সন্তানরা মারা যেত অথবা সন্ত্রাসীগোষ্ঠী আমার সন্তানদের নিয়ে যেত আমার কাছ থেকে।
পাঁচ সন্তানের জননী আসমা আল হাদি বলেন, আমি সাত বছর ধরে তুরস্কে অবস্থান করছি।
আল হাদি বলেন, আমি একজন কুর্দি। আমার এলাকা যদি সন্ত্রাসীমুক্ত হতো এবং শান্তি ফিরে আসত, তাহলে আমরা নিজ দেশে ফিরে যেতাম।
৩০ বছরের বেশি সময় ধরে তুরস্ক সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। পিকেকে তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। তাদের হাতে নারী ও শিশুসহ ৪০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। পিওয়াইডি/ওয়াইপিজে এটি সিরিয়ান শাখার।
তুরস্ক ৩৫ লাখেরও বেশি সিরিয়ান শরণার্থীদের জায়গা দিয়েছে, যা পৃথিবীর অন্য যে কোনো দেশের চেয়েও বেশি।
২০১১ সালে শুরু হওয়া এক বিধ্বংসী সংঘাত থেকে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ চলছে। যখন আসাদ সরকার অপ্রত্যাশিত হিংস্রতা বিক্ষোভকারীদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছিল।
সিরিয়ার কুর্দি ও আরব শরণার্থীরা তুরস্কের সাহায্যে নিজ দেশে ফেরারও স্বপ্ন দেখছে।