বিরোধীদের বিক্ষোভের মুখে একেবারে বেকায়দায় থাকা ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন বলেছে, ভেনেজুয়েলায় কোনো মার্কিন কূটনীতিক বা সেখানখার বিরোধী নেতা হুয়ান গুয়াইদোকে যদি কোনো ধরনের ‘হুমকিতে’ ফেলা হয়, তবে সেজন্য কারাকাসকে ‘উল্লেখযোগ্য জবাব’ পেতে হবে।
সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের আগ্রাসী নীতির ধারক যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন রোববার (২৭ জানুয়ারি) রাতে পৃথক বার্তায় ভেনেজুয়েলার উদ্দেশে এই হুঁশিয়ারি বার্তা দেন। তিনি বলেন, যেকোনো প্রকার ‘হুমকি’ বিবেচিত হবে ‘আইনের শাসনের ওপর ভয়াবহ আক্রমণ হিসেবে’।
যুক্তরাষ্ট্র ও এর প্রায় ২০টি মিত্রদেশ বিক্ষোভকারী নেতা গুয়াইদোকে ভেনেজুয়েলার ‘অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট’ বলে স্বীকৃতি দেওয়ার পর এবং যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি ও স্পেনের মতো কয়েকটি ইউরোপীয় শক্তি নতুন করে নির্বাচন দিতে মাদুরোকে আট দিনের সময় বেঁধে দেওয়ার পর ওয়াশিংটন এই হুঁশিয়ারি দিলো।
এদিকে, আগামী বুধ ও শনিবারও (৩০ জানুয়ারি ও ২ ফেব্রুয়ারি) প্রেসিডেন্ট মাদুরোর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ডেকেছেন গুয়াইদো। তিনি দুই ঘণ্টার ‘শান্তিপূর্ণ’ অবরোধে দেশকে অচল করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সমর্থকদের প্রতি।
যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ভেনেজুয়েলার শীর্ষ সামরিক প্রতিনিধি কর্নেল হোসে লুই সিলভাও মাদুরোর পক্ষ ত্যাগ করে গুয়াইদোকে ‘অন্তর্বর্তী’ প্রেসিডেন্ট হিসেবে মেনে নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
গত মে মাসে লাতিন আমেরিকার দেশ ভেনিজুয়েলায় সাধারণ নির্বাচনে জয়লাভের মাধ্যমে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন মাদুরো। এ মাসের শুরুতে শপথ নেন বামপন্থি এ রাজনীতিক। তবে বিরোধীরা প্রথম থেকেই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে পুনর্ভোটের দাবি জানিয়ে আসছে।
সম্প্রতি দেশটির অর্থনীতিতে মন্দাবস্থা দেখা দিলে রাস্তায় নামে বিরোধীরা। গত সপ্তাহে জাতীয় পরিষদের প্রেসিডেন্ট গুয়াইদো প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভকারীদের নেতৃত্ব দিতে থাকেন। এরপর তিনি নিজেকে ‘অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট’ বলেও ঘোষণা দিয়ে বসেন। তারপরই যুক্তরাষ্ট্র ও দেশটির মিত্রদের তরফ থেকে গুয়াইদোকে ‘স্বীকৃতি’ দিয়ে মাদুরো সরকারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দেওয়া হয়।
তবে আন্তর্জাতিকভাবে এমন চাপে থাকলেও সামরিক বাহিনী মাদুরোর পেছনেই তাদের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছে। রোববারই মাদুরো সামরিক বাহিনীর একটি মহড়া পরিদর্শন করে শীর্ষ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বক্তৃতা করেন। পাশাপাশি নতুন নির্বাচন দিতে ইউরোপীয় নেতাদের আলটিমেটামও উড়িয়ে দেন হুগো শাভেজের এই উত্তরসূরী।
কারাকাস মনে করে, ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ কোনো প্রস্তাব তুলতে চাইলেও তাতে তাদের দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত মিত্র রাশিয়া ভেটো দেবে।