ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পুলওয়ামায় বিশেষায়িত বাহিনী সিআরপিএফের গাড়িবহরে হামলায় ৪৪ জওয়ান নিহত হওয়ার ঘটনায় পাকিস্তানকে দোষারোপ করছে নয়াদিল্লি। ক্ষুব্ধ ভারত হামলাটির জেরে পাকিস্তানকে কয়েক দশক ধরে দিয়ে আসা ‘মোস্ট ফেভারড ন্যাশন’র তকমাও কেড়ে নিয়েছে। বিশেষ এ তকমার কারণে পাকিস্তানের কোনো পণ্য ভারতের বাজারে ঢুকতে অন্য দেশের তুলনায় বেশি সুবিধা পেতো।
বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পুলওয়ামায় মহাসড়কের ওপর হামলাটি চালানো হয়। পাকিস্তানের সন্ত্রাসী গোষ্ঠী জয়শ-ই-মোহাম্মদ এ হামলার দায় স্বীকার করেছে। বিক্ষুব্ধ নয়াদিল্লি এ ঘটনার পরপরই সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার অভিযোগ তুলে পাকিস্তানের দিকে।
এমনকি শুক্রবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) নয়াদিল্লিতে পাকিস্তানের হাইকমিশনার সোহেইল মাহমুদকে তলব করে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিজয় গোখলে তীব্র প্রতিবাদও জানান।
শুক্রবারই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নয়াদিল্লির বাসভবনে নিরাপত্তা বিষয় নিয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক হয়। এতে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও ছিলেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি, প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন, তিন বাহিনীর প্রধান-সহ শীর্ষ কর্মকর্তারা।
ওই বৈঠকেই পাকিস্তানের কাছ থেকে ‘মোস্ট ফেবার্ড ন্যাশন’র তকমা কেড়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় জানিয়ে অরুণ জেটলি বলেন, শিগগির এ সংক্রান্ত একটি নোটিশ জারি করবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে ১৯৯৬ সালে ভারতের তরফে পাকিস্তানকে এই বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়। এরপর পাকিস্তান থেকে সিমেন্ট, চিনি, ফল, ড্রাই ফ্রুটস, মিনারেল ওয়াটার, স্টিল-সহ অন্যান্য সামগ্রী ভারত কিনলেও শুল্ক-সুবিধা দিয়ে আসছিলো।
কূটনৈতিক মহল মনে করছে, ভারতের এই সিদ্ধান্তে বড়সড় ধাক্কাই খেলো পাকিস্তান। অর্থনৈতিকভাবে এতদঅঞ্চলে তুলনামূলক পিছিয়ে থাকা পাকিস্তান বাণিজ্যে এই বেকায়দায় পড়লে তাদের আরও ভুগতে হবে।
অরুণ জেটলি জানান, পাকিস্তানকে কিভাবে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ‘একঘরে’ করে ফেলা যায়, সেজন্য জোরদার তৎপরতা শুরু করবে ভারত।
কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার ঘটনাটির তীব্র নিন্দা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বলছেন, এ হামলায় জড়িত কাউকে রেহাই দেওয়া হবে না। মোক্ষম জবাব দেওয়া হবে।