logo
আপডেট : 21 March, 2019 19:48
ইয়েমেন যুদ্ধ ৫ বছরে পড়তে যাচ্ছে, অনাহারে মরছে শিশুরা
মেইল রিপোর্ট

ইয়েমেন যুদ্ধ ৫ বছরে পড়তে যাচ্ছে, অনাহারে মরছে শিশুরা

ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধ পাঁচ বছরে পড়তে যাচ্ছে। দুপক্ষের মধ্যে শান্তি চেষ্টাও স্থগিত রয়েছে। আর এতে ১০ বছরের শিশু আফাফের বাবার শেষ আশাটুকুও মিইয়ে যেতে শুরু করেছে। তিনি তার ক্ষুধার্ত কন্যাকে খাবার কিংবা স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে আতঙ্কে তার প্রতিটি দিন কাটছে।-

ইয়েমেনের বিচ্ছিন্ন পাহাড়ি গ্রামগুলোতে হুসেইন আবদুর মতো বহু বাবাকে দুর্গতির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। যুদ্ধের অনিবার্য ফল অর্থনৈতিক সংকটে ক্ষুধা, অপুষ্টি ও অপরিচ্ছন্ন পানিতে তাদের সন্তানেরা নিঃশ্বেষ হয়ে পড়ছে।

উত্তরপূর্ব ইয়েমেনে হাজ্জাহপ্রদেশে একটি ছোট্ট কৃষিনির্ভর পাহাড়ি গ্রাম আল জারেইবে থাকেন ৪০ বছর বয়সী আবদু। তিনি বলেন, যুদ্ধের আগে আমার খাবার জোগাড় করতে পারতাম। কারণ দাম ছিল হাতের নাগালে এবং সেখানে নিয়মিত কাজ পাওয়া যেত।

‘কিন্তু এখন সব কিছুর দাম ভয়াবহভাবে বেড়ে যাচ্ছে। পুষ্টির জন্য আমাদের ইয়োগার্ট ও রুটির ওপরই ভরসা করতে হয়,’ বললেন আবদু।

গত চার বছরের যুদ্ধে আরবের সবচেয়ে দরিদ্র দেশের রূপ নিয়েছে ইয়েমেন। দুর্ভিক্ষের একবারে শেষপ্রান্তে গিয়ে ঠেকেছে দেশটি।

যুদ্ধের কারণে ত্রাণ, জ্বালানি ও খাদ্যের পরিবহন রুট বন্ধ হয়ে গেছে। এতে আমদানি বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে।

পরিবারগুলোর উপার্জন নেই বললেই চলে। সরকারি খাতের বেতন বন্ধ রয়েছে। সংঘর্ষের কারণে লোকজন বসতবাড়ি থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। চাকরিও করতে পারছেন না।

জাতিসংঘ বলছে, দেশটির অন্তত ৪০ শতাংশ মানুষ মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। আর দুই-তৃতীয়াংশ গ্রাম দুর্ভিক্ষ-পূর্ব অবস্থায় রয়েছে।

বর্তমানে আফাফের ওজন ১১ কেজি। চিকিৎসক ও সেবিকারা বলছেন, তার যখন বেড়ে ওঠার সময়, তখন সীমিত খাবারের কারণে তার হাড় ও ত্বক মারাত্মক অপুষ্টিতে রয়েছে। এ ছাড়া সে হেপাটাইটিস রোগে আক্রান্ত। দূষিত পানির কারণেই এ জীবাণু তার শরীরে ঢুকতে পেরেছে।

তার শরীর এমনই দুর্বল হয়ে পড়েছে যে স্কুলে পর্যন্ত যেতে পারছে না। আবদু বলেন, এর অর্থ হচ্ছে- যুদ্ধের আগে সে যে অবস্থায় ছিল, এখন আর সেখানে নেই। আমি যদি কোথাও খাবার পড়ে থাকতে দেখি, তবে তা তুলে নিয়ে যাই, যাতে শিশুরা তাদের ক্ষুধা মেটাতে পারে।

চলতি বছরের শুরুতে যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়ে আফাফের মাও মারা গেছেন। তবে আবদুর আরেক স্ত্রী জীবিত রয়েছেন।

তিনি লোকজনের ভেড়া চরিয়ে বেড়ান এবং দুগ্ধ উৎপাদন থেকে অর্থ নেন। বর্তমান স্ত্রী ও ছয় শিশুসন্তানের ভরণপোষণের জন্য তার অন্য কোনো উপায় নেই।