
আগামী ১১ এপ্রিল থেকে ভারতে লোকসভা নির্বাচন শুরু হবে। ভারতের এই ষোড়শ লোকসভা নির্বাচন ১৯ মে পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। স্বাভাবিকভাবেই শেষ মুহূর্তের প্রচারে ব্যস্ত সব রাজনৈতিক দল। কিন্তু প্রচার-অপপ্রচারের মাঝে আটকানো যাবে কী ভুয়া খবর?
গত সপ্তাহে ভারতের নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপ, গুগল ও টিকটক-এর মতো ইন্টারনেট অ্যাপ্লিকেশনের প্রতিনিধিদের সাথে দুদিনব্যাপী বৈঠক করেন। নির্বাচনী প্রচারের নাম করে যাতে এই সব জনপ্রিয় অ্যাপের মাধ্যমে ভুয়া খবর না ছড়ায়, তা আলোচনা করার উদ্দেশ্যেই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ভারতের প্রধান নির্বাচন কমিশনার সুনিল অরোরা বলেন, আমরা চাই যাতে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে একটি নির্দিষ্ট আচরণবিধি রাখা হয়, যাতে করে এই অ্যাপগুলোকে ভুল খবর ছড়াতে ব্যবহার না করা যায়।
বর্তমানে ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অনলাইন মার্কেট, যেখানে মোট ৪৬ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। ফলে অনলাইন যোগাযোগ মাধ্যমের গুরুত্ব ভোটের বাজারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধু তাই নয়, ভারতে এর আগে সামাজিক মাধ্যমে করা পোস্টকে ঘিরে ঘটেছে একাধিক সহিংসতার ঘটনা।
কীভাবে চিনবেন ভুয়া খবর?
ভারতের তথ্যনির্ভর সংবাদ সংস্থা ‘অল্ট-নিউজ'-এর প্রতিষ্ঠাতা প্রতীক সিনহার ভাষায় কাজটি মোটেও সহজ নয়। ভোটের সময় বলে নয়, এই কাজ অনেক আগেই শুরু করা উচিত ছিল বলেও মনে করেন তিনি।
সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদন বলছে, ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির নিয়ন্ত্রণে বর্তমানে দুই থেকে তিন লাখ হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ রয়েছে।
অন্যদিকে কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণে থাকা গ্রুপের সংখ্যা ৮০ হাজার থেকে এক লাখ।
হোয়াটসঅ্যাপকে দলীয় নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করতে নতুন উপায় ভাবা হচ্ছে, যার সাহায্যে জানা যাবে গ্রুপে ছড়ানো ছবির আসল উৎস। এমনটাই জানিয়েছেন হোয়াটসঅ্যাপের ভারত অঞ্চলের প্রধান কর্মকর্তা অভিজিৎ বোস।
ফেসবুকের প্রতিনিধি শিবনাথ ঠাকরাল বলেছেন, আগামী কয়েক মাস নির্বাচন কমিশনসহ একাধিক তথ্যনির্ভর সংবাদ সংস্থা ও গবেষক দলের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কাজ করবেন তারা, যাতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কোনও ভুয়া খবর ছড়ানো না যায়।
অনলাইন মাধ্যমের আগমনে ভারতে বদলেছে রাজনৈতিক প্রচারের ধরন, বেড়েছে ভুয়া খবরের প্রকোপ। কিন্তু ২০১৯ সালের নির্বাচনে ভুয়া খবর ঠেকাতে নতুন আচরণবিধির দাবি আদৌ সফল হবে কিনা, তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত নন জিগনেশ তিওয়ারির মতো অনেক ডিজিটাল অ্যানালিস্ট।