ইউএসএস আরলিংটন যাচ্ছে উপসাগরে। যোগ দেবে ইউএসএস আব্রাহাম লিংকনের সাথে মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর জানিয়েছে, তারা উপসাগরীয় অঞ্চলে আরও একটি যুদ্ধজাহাজ এবং পেট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা মোতায়েন করছে।
মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস আরলিংটনের মধ্যপ্রাচ্যের দিকেই যাওয়ার কথা ছিল পূর্বনির্ধারিত সময়সূচী অনুসারেই। কিন্তু ইরানের সঙ্গে সাম্প্রতিক উত্তেজনার পটভূমিতে এখন এই জাহাজটি সেখানে অনেক আগেই পাঠানো হচ্ছে। এই জাহাজে উভচর সামরিক যান এবং যুদ্ধবিমান পরিবহন করা যায়।
ঐ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র এর আগে আরও একটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে। ইউএসএস আব্রাহাম লিংকন মাত্রই সুয়েজ খাল অতিক্রম করে উপসাগরীয় অঞ্চলের পথে রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র এখন সেখানে পেট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন করতে চলেছে। এই ক্ষেপণাস্ত্র আন্ত-মহাদেশীয়, দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ছাড়াও বিমান হামলা রুখতে সক্ষম।
কেন এখন এই যুদ্ধের প্রস্তুতি ?
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর বলছে, তারা ইরানের সাথে সংঘাত চায় না, কিন্তু মার্কিন সৈন্যদের বিরুদ্ধে হুমকি মোকাবেলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ঠিক কী ধরণের হুমকির মুখোমুখি মার্কিন সৈন্যরা হয়েছে- তা খোলাসা করে বলা হচ্ছে না। ইরাকে প্রায় পাঁচ হাজারের বেশি মার্কিন সৈন্য মোতায়েন রয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে করা পরমাণু চুক্তি থেকে একতরফা-ভাবে বেরিয়ে যাওয়ার পর থেকেই দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি থেকে বেরিয়ে গেলেও, চীন, রাশিয়া, ব্রিটেন এবং ফ্রান্স এখনও ইরানের সাথে করা চুক্তি বজায় রেখেছে।
বিবিসির প্রতিরক্ষা বিষয়ক বিশ্লেষক জনাথন মার্কাস বলছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এখন চান ইরানের সাথে করা এই পরমাণু চুক্তি পুরোপুরি ভেস্তে যাক। ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, তার ফলে ইরানের অর্থনীতি দিনে দিনে সঙ্কটে নিমজ্জিত হচ্ছে। এই নিষেধাজ্ঞার মূল উদ্দেশ্য যেন ইরান তাদের তেল অন্যদেশের কাছে বিক্রি করতে না পারে।
এছাড়া গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সবচেয়ে সুসজ্জিত বাহিনী রেভলিউশনারী গার্ডকে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে।
ইরানের পাল্টা হুমকি
যুক্তরাষ্ট্রের এই সমর প্রস্তুতিকে মোটেই ভালোভাবে নিচ্ছে না ইরান। তারা বলছে আমেরিকা 'মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ' শুরু করেছে। ইরান যুক্তরাষ্ট্রের এসব পদক্ষেপের পাল্টা হিসাবে হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেবে বলে হুমকি দিয়েছে।
বিশ্বে প্রতি বছর যত জ্বালানি তেল ব্যবহৃত হয়, তার এক পঞ্চমাংশ সরবরাহ যায় এই হরমুজ প্রণালী দিয়ে। ইরানের ক্ষমতাধর একজন ধর্মীয় নেতা ইউসেফ তাবাতাবাই-নেজাদকে উদ্ধৃত করে আধা-সরকারি ইরানি সংবাদ সংস্থা ইসনা বলছে, একটি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতেই যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ জাহাজের বহর ধ্বংস হয়ে যাবে।