তুরস্কে রমজান হলো সহমর্মিতার মাস। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত এ দেশের মুসলিমরা দীর্ঘদিন ধরে ইসলামি বিধিবিধান পালনে নিষেধাজ্ঞার কবলেও পড়ে থাকতে হয়েছিলো, কিন্তু তবুও ইসলামের প্রতি তাদের অনুরাগ যে মোটেই কমে নি, তা রমজানের আবহ দেখলে বোঝা যায়।
রমজান যেন তুর্কিদের কাছে মুক্তির বারতা নিয়ে আসে। এ মাসে তারা প্রাণ খুলে মোনাজাত করে এবং ঘুরে ঘুরে একে অপরের বাড়িতে গিয়ে রমজানের শুভেচ্ছা জানায়।
রমজানে তুরস্কে বেচাকেনার মাত্রা বহুগুণে বেড়ে যায়। কিন্তু দিনের বেলায় পর্যটন এলাকা ছাড়া অধিকাংশ এলাকার খাবার হোটেল ও রেস্তোঁরা বন্ধ থাকে।
রমজানে শ্রমজীবী মানুষের প্রতি তুর্কি জনগণের নজরকাড়া সহানুভূতি চোখে পড়ে। অনেকেই শ্রমিকদের কাজের ভার কমিয়ে দেয়। শ্রমিক-মালিক একসঙ্গে ইফতার করে। সরকারের পক্ষ থেকে তুরস্কে রমজান মেলার আয়োজন করা হয়। এ মেলায় বাচ্চাদের বিনোদনের ব্যবস্থাও থাকে।
তুরস্কের অধিকাংশ মানুষই ধর্মপরায়ণ। এদেশেও খেজুর আর পানি দিয়ে ইফতার করেন রোজাদাররা। তুরস্কের অনেক জায়গায় ‘রমজান কিবাবি’ নামক খাদ্যটির ইফতার হিসেবে আলাদা কদর রয়েছে। এটা বিশেষ ধরনের কাবাব। নানারকম শরবতের ব্যবহারও বেশ পুরোনো।
এছাড়া জলপাই, বিখ্যাত রমজান পাইড রুটি, পনির, মশলাদার গরুর মাংসের পাতলা স্লাইস, সসেজ, মিষ্টি মাখন, ফল, মধু, প্রচুর পরিমাণ টমেটো, শশা ইত্যাদি দিয়ে ইফতার করেন তুর্কিরা।
তুর্কিদের ইফতার আয়োজনে শুধু মুসলমানরাই নয়, ভিন্ন ধর্মাবলম্বীরাও এক কাতারে বসে ইফতার করে। এছাড়া বড় বড় মসজিদের চারপাশে শত শত দোকানদার নানারকম ইফতারের পসরা সাজিয়ে বসে।
রাতের খাবারের পর তুরস্কের লোকজন শহরের বাইরে গিয়ে সান্ধ্য আয়োজন উপভোগ করে। এ সময় তারা বিভিন্ন ইসলামিক পোগ্রামে যোগ দেয় এবং বিভিন্ন আঙিনা ও পার্কে ঘুরে বেড়ায়।