বিক্ষোভে উত্তাল হংকং। ১০ লাখের বেশি মানুষ হংকংয়ের রাস্তায় বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে। তারপরও অনড় হংকংয়ের কর্তৃপক্ষ। তারা জানিয়েছে, প্রস্তাবিত প্রত্যর্পণ বিল পাস করা হবে। প্রশাসনের এমন ঘোষণার পর থেকে হংকংয়ের পার্লামেন্ট ভবন ঘিরে রেখেছে দাঙ্গা পুলিশ।
প্রস্তাবিত এই বিলটি আইনে পরিণত হলে সন্দেহভাজন যেকোনো ব্যক্তিকে বিচারের মুখোমুখি করতে পারবে চীন।
এমন পরিস্থিতিতে এই প্রস্তাবিত প্রত্যর্পণ বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে লাখো ছাত্র-জনতা হংকংয়ের রাস্তায় নেমে এসেছে। গত এক দশকের মধ্যে হংকংয়ে এটিই সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ সমাবেশ। প্রথমে শান্তিপূর্ণভাবেই শুরু হলেও একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পেপার স্প্রে ছোড়ে।
এদিকে নয়া রাজনৈতিক সঙ্কটে চাপের মুখে পড়েছেন অঞ্চলটির প্রধান নির্বাহী ক্যারি ল্যাম ও তার বেইজিংয়ে থাকা পৃষ্ঠপোষকরা। প্রবীণ আইনপ্রণেতারা ল্যামকে পদত্যাগ করতে বলছেন।
অন্যদিকে হংকং প্রশাসনের মুখ্য সচিব ম্যাথু চিয়াং সোমবার জানিয়েছেন, জনগণের দাবি মাথায় রেখের প্রস্তাবিত বিলটি সংশোধন করা হয়েছে।
তিনি জানান, আগামী বুধবার পরিমার্জিত বিলটি পার্লামেন্টে আলোচনার জন্য তোলা হবে। ম্যাথু বলেন, আশা করি, আইনসভায় সবাই বিষয়টি নিয়ে সবাই খোলাখুলি, শান্তিপূর্ণ ও যৌক্তিকভাবে কথা বলবেন।
মূলত গত বছরের এক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এই বিলটি তৈরি করা হয়। হংকংয়ের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে তাইওয়ানে ছুটি কাটানোর সময় অন্তঃসত্ত্বা বান্ধবীকে হত্যার অভিযোগ ওঠে। কিন্তু তাইওয়ানের সঙ্গে হংকংয়ের কোনও বন্দি বিনিময় চুক্তি না থাকায় গর্ভবতী বান্ধবীকে খুন করে হংকংয়ে ফিরে আসে ওই ব্যক্তি। কিন্তু বিচারের জন্য তাকে এখন তাইওয়ান ফেরত পাঠানো যাচ্ছে না।
প্রস্তাবিত প্রত্যর্পণ বিলটি পাশ হলে এরকম পরিস্থিতিতে সন্দেহভাজন অপরাধীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো যাবে। কিন্তু হংকংয়ের সাধারণ জনগণ সন্দেহ করছেন, চীন এই আইনের সুবিধা নিয়ে হংকংবাসীর ওপর খবরদারি বাড়াতে পারে। এভাবেই বিষয়টি হংকংয়ে এ মুহূর্তে একটি রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত হয়েছে।
উল্লেখ্য, হংকং চীনের একটি বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে চীন প্রশাসন ২০৪৭ সাল পর্যন্ত অঞ্চলটির স্বায়ত্তশাসনের নিশ্চয়তা দিয়েছে। ব্রিটিশ উপনিবেশ হংকংকে ১৯৯৭ সালে চীনের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়।