শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে দুর্দান্তভাবে বিশ্বকাপযাত্রা করে বাংলাদেশ। তবে পরের ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে লড়ে হেরে যায় টাইগাররা। আর সবশেষ ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বিধ্বস্ত হয় তারা। স্বাভাবিকভাবেই নিজেদের লক্ষ্যের পথে বড় ধাক্কা খায় মাশরাফি-সাকিবরা। যে কারণে জয়ের জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেছে তারা।
এ পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার বিশ্বকাপের দ্বাদশ আসরে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচ খেলতে নামবে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ আন্ডারডগ শ্রীলংকা। এ ম্যাচে জয় ভিন্ন কিছু ভাবছে না টাইগাররা। জয় পেতে ক্ষুধার্ত তারা। কারণ, সেমিফাইনালে খেলার রেসে টিকে থাকতে হলে ম্যাচটি জিততেই হবে তাদের। বিস্ট্রলের কাউন্টি গ্রাউন্ডে বাংলাদেশ সময় বিকাল সাড়ে ৩টায় শুরু হবে দুই দলের লড়াই।
এবার সেমিফাইনালে খেলার লক্ষ্য নিয়ে দেশ ছাড়ে বাংলাদেশ। শুরুটা সেরকমই ছিল। লন্ডনের বিখ্যাত ভেন্যু কেনিংটন ওভালে শক্তিশলী দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২১ রানে হারিয়ে টুর্নামেন্টে শুভসূচনা করে টাইগাররা। পরের ম্যাচে একই ভেন্যুতে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হয় তারা। দুর্দান্ত লড়াই করেও শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি হেরে যায় মাশরাফি-সাকিবরা। ২ উইকেটের হারে টুর্নামেন্টে প্রথম ধাক্কা খায় তারা।
এরপর নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কার্ডিফের পয়মন্ত ভেন্যুতে খেলতে নামে বাংলাদেশ। ইংলিশদের মুখোমুখি হওয়ার আগে সেখানে দুটি ম্যাচ খেলে শতভাগ জয় পায় টাইগাররা। এছাড়া বিশ্বকাপের মঞ্চে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুবার খেলে দুটিতেই জয়ের রেকর্ড ছিল তাদের। তাই জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসীই ছিল লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। তবে ১০৬ রানের বড় ব্যবধানে হেরে যায় তারা।
ফলে তিন ম্যাচে ১ জয় ও ২ হারে বাংলাদেশের সংগ্রহে রয়েছে ২ পয়েন্ট। এতে সেমিফাইনালে খেলার পথ ঝাপসা হতে শুরু করে। সেমিতে খেলতে হলে পরের ৬ ম্যাচের অন্তত ৪টিতেই জিততে হবে টাইগারদের। তাই শ্রীলংকার বিপক্ষে জয় ছাড়া অন্য কিছুই ভাবছে না তারা।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ শেষে মিক্সড জোনে বাংলাদেশ অফস্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ বলেন, শ্রীলংকার বিপক্ষে জয় পাওয়াটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। টুর্নামেন্টে ভালোভাবে টিকে থাকতে হলে এ ম্যাচে আমাদের জিততেই হবে। এ নিয়ে ম্যানেজমেন্ট পরিকল্পনা করছে-কিভাবে আরো ভালো করা যায়।
ব্রিস্টলে বাংলাদেশের সুখস্মৃতি রয়েছে। এ ভেন্যুতে একটি ম্যাচ খেলে সেটিই জিতেছে টাইগাররা। ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মাশরাফির অলরাউন্ড নৈপুণ্যে স্বাগতিকদের ৫ রানে হারায় তারা। ওই জয়ে সিরিজের সমতা আনে বাংলাদেশ। তবে তৃতীয় ম্যাচ হেরে সিরিজ হারে সফরকারীরা। তবুও ওই জয় তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে এতে কোনো সন্দেহ নেই।
তবে শ্রীলংকার বিপক্ষে বাংলাদেশের রেকর্ড ভালো নয়। ৪৫ দেখায় মাত্র ৭টিতে জয় পেয়েছে টাইগাররা। অবশ্য সবশেষ মুখোমুখিতে জয় আছে তাদের। গেল বছর এশিয়া কাপে শ্রীলংকাকে পাত্তাই দেয়নি বাংলাদেশ। ১৩৭ রানের বিশাল জয় তুলে নেয় মাশরাফি বাহিনী। তাই এ ভেন্যুতে এক জয়ের স্মৃতি ও লংকানদের বিপক্ষে সবশেষ দেখায় বড় জয় এ ম্যাচে সাফল্য পেতে এগিয়েই রাখবে তাদের।
বাংলাদেশের মতো এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে ৩টি ম্যাচ খেলেছে শ্রীলংকা। তবে টাইগারদের চেয়ে এক পয়েন্ট বেশি সংগ্রহে রয়েছে তাদের। কারণ, লংকানরা ১টি করে ম্যাচ জিতেছে, হেরেছে ও পরিত্যক্ত হয়েছে। তাই ৩ পয়েন্ট সংগ্রহে রয়েছে তাদের।
নিউজিল্যান্ডের কাছে ১০ উইকেটে হার দিয়ে এবারের আসরে যাত্রা শুরু করে শ্রীলংকা। এরপর বৃষ্টি আইনে আফগানিস্তানকে ৩৪ রানে হারায় লংকানরা। আর পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়।
বাংলাদেশ দল : মাশরাফি বিন মুর্তজা (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান (সহঅধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), লিটন দাস, মোহাম্মদ মিঠুন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদি হাসান মিরাজ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মোসাদ্দেক হোসেন, আবু জায়েদ রাহী, রুবেল হোসেন ও মোস্তাফিজুর রহমান।
শ্রীলংকা দল : দিমুথ করুনারত্নে (অধিনায়ক), ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, আবিস্কা ফার্নান্দো, সুরঙ্গা লাকমল, লাসিথ মালিঙ্গা, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ, কুশল মেন্ডিস, জীবন মেন্ডিস, কুশল পেরেরা, থিসারা পেরেরা, মিলিন্দা সিরিবর্ধনে, লাহিরু থিরিমান্নে, ইসরু উদানা ও জেফরি বান্দারসে।