ঘনিয়ে আসছে মার্কিন নির্বাচন। আগামী বছর (২০২০ সালে) অনুষ্ঠিত হবে দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এ নির্বাচনকে ঘিরে ডেমোক্র্যাট দল থেকে প্রেসিডেন্ট পদপ্রত্যাশী প্রার্থীদের টেলিভিশন বিতর্ক শুরু হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় এ রাজনৈতিক বিতর্ক অনুষ্ঠান দেখতে উৎসুক লাখ লাখ ভোটার। বুধবার মিয়ামিতে দুই ঘণ্টার প্রথম বিতর্ক অনুষ্ঠানে স্টুডিওতেও ছিল দর্শকশ্রোতাদের সরব উপস্থিতি।
বিতর্কের সময় প্রার্থীরা সবাই নিজেকে মধ্যমনি করে রাখার চেষ্টায় ব্যস্ত ছিলেন। কেউ কেউ চিৎকার করেও নিজের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালান।
বুধবার প্রথম ধাপে ১০ জন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বিতর্কে অংশ নিয়েছেন। স্বাস্থ্যসেবা ও অভিবাসন নিয়ে তুমুল বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন তারা। বেশ কয়েকজন প্রার্থী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পসহ অন্যান্য রাজনৈতিক বিষয়ও টেনে এনেছেন।
দ্বিতীয় ধাপে বৃহস্পতিবার রাতে আরও ১০ জন ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর টিভি বিতর্কে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্সের মতো প্রার্থীরা।
বেসরকারি চিকিৎসা বীমাকে সরকারি খাতে নিয়ে যাওয়ার সমর্থনে কথা বলেন ম্যাসাচুসেটসের সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন। তাকে সমর্থন দেন নিউ ইয়র্কের মেয়র ব্লাসিও। অন্যান্য ডেমোক্র্যাটরা এমন নীতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এর বিরোধিতা করেন।
অন্যদিকে, অবৈধ অভিবাসন এবং মেক্সিকো সীমান্ত নীতি নিয়ে কথা বলেন সাবেক কংগ্রেস নেতা বেটো ও'রোর্ক এবং ওবামার সাবেক হাউজিং সেক্রেটারি জুলিয়ান ক্যাস্ট্রো। মেক্সিকো সীমান্তে শরণার্থীদেরকে আটক করা এবং পরিবারগুলোকে বিচ্ছিন্ন করার বিষয়টি নিয়ে ও’রোরক কে আক্রমণ করে কথা বলেন কাস্ট্রো।
তিনি যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা শরণার্থীদের অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করার বিপক্ষে একটি বিল আনবেন জানিয়ে এতে ওরোরকের সমর্থন দাবি করেন।
আরও দুইজন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে বিতণ্ডায় জড়ান। তারা বিদেশে হস্তক্ষেপের ব্যাপারে ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে একতা না থাকার বিষয়টি তুলে ধরেন।
কংগ্রেস সদস্য টিম রায়ান মধ্যপ্রাচ্য সংকটে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘পুরোপুরি নিয়োজিত’ থাকতে হবে বলে যুক্তি দেন। কিন্তু যুদ্ধ-বিরোধী কংগ্রেস সদস্য তুলসী গব্বার্ড এর প্রতিবাদে আফগানিস্তান যুদ্ধে সদ্য মারা যাওয়া দুই মার্কিন সেনার বিষয়টি তুলে ধরে পাল্টা যুক্তি দেখান।
শেষ দিকে বিতর্ক অনুষ্ঠানের উপস্থাপক ওয়াশিংটনের গভর্নর জে ইনস্লিকে প্রশ্ন করেন, যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ভূরাজনৈতিক হুমকি কি? উত্তরে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তায় সবচেয়ে বড় হুমকি ডনাল্ড ট্রাম্প।
আর যখন সবাইকে প্রশ্ন করা হয়, ক্ষমতায় গেলে ইরানের সঙ্গে ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তিতে আবার ফিরবেন কিনা। তখন একমাত্র নিউ জার্সির সিনেটর কোরি বুকার বাদে সবাই হাত তোলেন।
বিতর্কে যারা অংশগ্রহণ করেছেন: এলিজাবেথ ওয়ারেন (ম্যাসাচুসেটস এর সিনেটর), কোরি বুকার (নিউ জার্সি সিনেটর), বেটো ও’রোর্ক (টেক্সাসের সাবেক কংগ্রেস সদস্য), অ্যামি ক্লোবুচর (মিনেসোটা সিনেটর), তুলসী গব্বার্ড (হাওয়াই এর কংগ্রেস সদস্য), জে ইনস্লি (ওয়াশিংটনের গভর্নর), বিল ডি ব্লাসিও (নিউ ইয়র্কের মেয়র), টিম রায়ান (ওহাইওর কংগ্রেস সদস্য), জন ডিলেইনি (মেরিল্যান্ডের সাবে কংগ্রেস সদস্য) ও জুলিয়ান ক্যাস্ট্রো (প্রেসিডেন্ট ওবামার সাবেক হাউজিং সেক্রেটারি)