যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে বড় সামরিক কুচকাওয়াজের আয়োজন করতে যাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রেওয়াজ ভেঙে দেশটির ইতিহাসে এই প্রথম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে এমন আয়োজন হতে চলেছে এবং এতে অংশ নিচ্ছেন কোনো প্রেসিডেন্ট।
ট্রাম্পের এই ‘মনোবাসনা’ পূরণে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পার্ক সংস্থা (এনপিএস) আড়াই লাখ ডলার দিচ্ছে। ওয়াশিংটন ডিসির ল্যান্ডস্ক্যাপড পার্ক ন্যাশনাল মলে হতে চলেছে স্বাধীনতা দিবসের এই কুচকাওয়াজ।
হোয়াইট হাউসের কয়েকজন কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছে।
অস্ত্র প্রতিযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রধানতম প্রতিদ্বন্দ্বী রাশিয়া তাদের বিজয় দিবসে (৯ মে) প্রতিবছরই কুচকাওয়াজে সমরাস্ত্র প্রদর্শন করে। চীন, ফ্রান্স, ভারতসহ বিভিন্ন পরাশক্তিও তাদের বিভিন্ন দিবসে এ ধরনের প্রদর্শনীর আয়োজন করে। ২০১৭ সালে ফ্রান্সে বাস্তিল দিবস উদযাপনের সময় বিশেষ অতিথি ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তখন ফরাসি সশস্ত্র বাহিনীর সামরিক কুচকাওয়াজ দেখে ওয়াশিংটনেও স্বাধীনতা দিবসে এমন আয়োজন করার ইচ্ছে পোষণ করেন ট্রাম্প। বিভিন্ন বাধায় গত দুই বছর এমন আয়োজন করতে না পারলেও এ বছর ট্রাম্প সেই ইচ্ছে পূরণ করতে চলেছেন। তিনি তার বহুলকাঙ্ক্ষিত এ আয়োজনের নাম দিয়েছেন ‘স্যালুট টু অ্যামেরিকা’।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ট্রাম্প প্রশাসনের দু’জন কর্মকর্তা বলেছেন, বিশেষ এ প্রদর্শনীতে থাকছে- আব্রাম ট্যাংক, সাঁজোয়া যান ও এয়ার ফোর্স ওয়ানসহ বিভিন্ন যুদ্ধবিমানের মহড়া।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে এমন বিশেষ কোনো আয়োজন করেননি প্রেসিডেন্ট। কিন্তু এবারই প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে এ বিশেষ আয়োজন করছেন ট্রাম্প। এদিন ন্যাশনাল মলের লিংকন মেমোরিয়াল হলে ‘স্যালুট টু অ্যামেরিকা’ শীর্ষক বক্তৃতাও দেবেন ট্রাম্প। সেজন্য বিরোধীরা এই আয়োজনকে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত প্রচারণা হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। বিশেষ করে ২০২০ সালে নির্বাচন হতে চলেছে বিধায় ব্যক্তিগত প্রচারণার বিষয়টি উড়িয়ে দিচ্ছে না সংবাদমাধ্যমও।
এদিকে ট্রাম্পের বক্তৃতার জন্য লিংকন মেমোরিয়াল হলের বেশিরভাগ আসনই ‘বিশেষ ব্যক্তিদের’ জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ফলে উন্মুক্ত আসন সীমিত হওয়ায় জনসাধারণের এ আয়োজনে অংশ নেওয়ার সুযোগ কম বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত এ পার্কে এমন আয়োজনে জনসাধারণের অধিকার ক্ষুন্ন হবে বলেই দাবি করছেন বিরোধীদলের নেতারা। এছাড়া পার্ক সংস্থার অর্থে এ ধরনের আয়োজনের যৌক্তিকতাও প্রশ্নবিদ্ধ করছেন অনেকে।
ন্যাশনাল পার্ক কনজারভেশন অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও প্রেসিডেন্ট টেরিজা পিয়ার্নো বলেন, ট্রাম্পের এমন উদ্যোগ দেশটির সাধারণ মানুষের সঙ্গে এক ধরনের বিশ্বাসঘাতকতা। কারণ জনসাধারণ প্রেসিডেন্টের সামরিক প্রদর্শনী আয়োজনের জন্য নয়, পার্কের সংস্কার কাজ এবং বিভিন্ন শিক্ষামূলক কর্মসূচির জন্য অর্থ দিয়ে থাকে।