ট্যাংকার সংকট নিয়ে সুর নরম করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। ইরানি জাহাজ ছেড়ে দেয়ার বিনিময়ে ব্রিটিশ পতাকাবাহী ট্যাংকারও মুক্ত করে দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।
একই সঙ্গে আত্মসমর্পণের শর্তে আলোচনার জন্য ইরান রাজি নয় বলেও মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট রুহানি।
বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি বলেন, আমরা ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে উত্তেজনা চাই না। আমরা আলোচনার জন্য প্রস্তুত, তবে আত্মসমর্পণের শর্তে নয়। যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বরিস জনসনের দায়িত্ব গ্রহণের দিনই এ প্রস্তাব দিলেন রুহানি।
সম্প্রতি ইরানের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের উত্তেজনা বেড়েছে। গত শুক্রবার হরমুজ প্রণালিতে যুক্তরাজ্যের একটি তেল ট্যাংকার আটক করে ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনী। তেহরানের দাবি, আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক আইন লঙ্ঘনের দায়ে ট্যাংকারটি আটক করা হয়েছে।
এর আগে জিব্রাল্টার প্রণালিতে ইরানের একটি জাহাজ আটক করেছিল ব্রিটেন। এ ঘটনায় কয়েক দিন ধরে দু’দেশের মধ্যে বাকযুদ্ধ চলছে। এরই মধ্যে জাহাজ ও ট্যাংকার বিনিময়ের জন্য ব্রিটেনকে প্রস্তাব দিলেন রুহানি।
আলোচনার ইঙ্গিত দিয়ে ইরানি প্রেসিডেন্ট বলেন, এ দেশের নির্বাহী দায়িত্ব যতদিন আমার হাতে আছে, আমরা সমস্যা সমাধানে যে কোনো ধরনের সৎ ও বৈধ আলোচনায় প্রস্তুত। তবে একই সঙ্গে আলোচনার নামে আত্মসমর্পণের প্রস্তাবে আমরা রাজি নই।
ইরান ও ব্রিটেনের মধ্যে ট্যাংকার সংকটকে বরিস জনসনের জন্য বিশ্বস্ততা প্রমাণের পরীক্ষা বলে জানিয়েছে এএফপি। ইরান পরমাণু চুক্তি বা ট্যাংকার আটক নিয়ে বরিস কোন দিকে টলে তা নিয়ে বিশ্লেষকরা বিভিন্ন মত দিচ্ছেন।
দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সম্পাদকীয় বোর্ড জানায়, খুব সহজভাবে বরিস ঘোষণা করতে পারেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ চাপকে সমর্থন দিচ্ছে যুক্তরাজ্য এবং নতুন চুক্তির ডাক দিচ্ছে। ইরানের পক্ষ থেকে ‘ব্রিটিশ ট্রাম্প’ তকমা পাওয়া বরিস তেহরানের সঙ্গে সমঝোতায় যাবেন কি না, বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়।
এদিকে ব্রাজিলে আটকা পড়েছে ইরানের দুটি জাহাজ। ব্রাজিলের পেট্রোব্রাস তেল কোম্পানি ইরানি ওই জাহাজ দুটিতে তেল সরবরাহ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। জাহাজ দুটি ইউরিয়া নিয়ে ব্রাজিলে গিয়েছিল।
হুশিয়ারি উচ্চারণ করে ইরান বলেছে, জ্বালানি না দিলে ব্রাজিলকে এর পরিণতি ভোগ করতে হবে। ব্রাজিল থেকে বছরে যে ২০০ কোটি ডলার পণ্য আমদানি করা হয় তা বাতিল করা হবে।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো গত শুক্রবার বলেছেন, ইরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বাড়ানোর বিষয়ে স্থানীয় কোম্পানিগুলোকে সতর্ক করেছে সরকার। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে কাজ করছেন।