শুভজিৎ পুততুন্ড, কলকাতা থেকে: এবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতারণা মামলায় 'নাম জড়াল' শাহরুখ খানের। ভারতের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কিং খানের কী সম্পর্ক তা হলফনামায় জানাতে হবে বলিউডের বাদশাহকে। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক হাইকোর্টের পুজোর ছুটির ২ সপ্তাহ পর শাহরুখকে হলফনামা দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
জানা গেছে, হলফনামায় ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব প্ল্যানিং অ্য়ান্ড ম্যানেজমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড নামে প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তাঁর কি সম্পর্ক ছিল তা জানাতে হবে শাহরুখকে। এমনকী প্রতিষ্ঠানে তাঁর ভূমিকাই বা কি ছিল তাও কিং খানের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে। অভিযোগকারীর দাবি, শাহরুখকে দেখিয়ে পড়ুয়াদের মনে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে বিশ্বাস জাগাতে চেয়েছে ওই প্রতিষ্ঠান। তাই এই মামলা থেকে তাঁকেও অব্যাহতি দেওয়া উচিত নয়।
ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব প্ল্যানিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সারা দেশব্যাপী ক্যাম্পাস ছিল। বিবিএ, এমবিএ'র মতো বিষয়গুলির উচ্চ শিক্ষার কোর্স করানো হত ওই প্রতিষ্ঠানে। শাহরুখ খান ছিলেন ওই প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। কিন্তু দিল্লি হাইকোর্ট জানায়, ইউজিসি বা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জরি কমিশনের কোনও অনুমোদন নেই ওই প্রতিষ্ঠানের ৷ তাই ওই প্রতিষ্ঠানের সমস্ত শাখা বন্ধ করতে হবে। যদিও রায় বের হওয়ার আগেই বহু অভিভাবক ওই প্রতিষ্ঠানে ছেলে মেয়েদের ভর্তি করে দিয়েছিলেন। এই রায়ের পরই সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে কপালে ভাঁজ পড়ে কলকাতার বাসিন্দা প্রেমানন্দ মুখোপাধ্য়ায়ের। কারণ ১৭ লক্ষ টাকা দিয়ে নিজের ছেলেকে ওই প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করিয়েছেন তিনি।
পরে রায় শুনে ওই বছরই সল্টলেকের বিধাননগর ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানায় আইআইপিএম-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান প্রাক্তন সেনাকর্মী প্রেমানন্দবাবু। তাঁর অভিযোগ ধাপে ধাপে ওই প্রতিষ্ঠানে ১৭ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ছেলেকে পড়াতে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের কোনও অনুমতিপত্র না থাকায় টাকা ফেরত চান তিনি। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের তরফে কোনও উচ্চবাচ্য না করায় শেষে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
প্রেমানন্দবাবুর অভিযোগ, পুলিশও এ বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। পরে কলকাতা হাইকোর্টে তিনি মামলা করেন। বৃহস্পতিবার বিচারপতি দেবাংশু বসাকের এজলাসে ওই প্রাক্তন সেনাকর্মীর হয়ে ছিলেন আইনজীবী মধুসূদন সরকার। তিনি বলেন, 'দিল্লি হাইকোর্ট ওই প্রতিষ্ঠানকে বলে দিয়েছিল সেটি একটি নকল প্রতিষ্ঠান। তারা কোনোভাবেই পড়ুয়াদের বিপথে চালিত করতে পারে না। তাদের প্রতিষ্ঠানের বর্তমান স্ট্যাটাস প্রচার করতে হবে এবং প্রতিষ্ঠান নিয়ে চারিদিকে যে বিজ্ঞাপন রয়েছে তা প্রত্যাহার করতে হবে। পড়ুয়ারা চাইলে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপও নিতে পারে। কিন্তু পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তাই এই মামলার তদন্তভার সিবিআইকে দেওয়া হোক