তুহিন সানজিদ: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘চ্যাম্পিয়ন অব স্কিল ডেভেলপমেন্ট ফর ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড’ শীর্ষক পুরস্কার দিয়েছে ইউনিসেফ। এ নিয়ে জাতিসংঘের চলতি অধিবেশনে যোগ দিয়ে দুই পুরুস্কার পেলেন বিশ্বের অন্যতম এই রাজনীতিক।
এই পুরস্কার তিনি উৎসর্গ করেন বিশ্বের সকল শিশু, তরুণসহ বাংলাদেশের জনগণকে। পুরুস্কার গ্রহণ করে উচ্ছাসিত প্রধানমন্ত্রী বললেন- এই সম্মান আমার একার না। এই সম্মান বাংলাদেশের।
বৃহস্প্রতিবার নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় সন্ধা ৭ টায় জাতিসংঘ শিশু তহবিল- ইউনিসেফ কার্যালায়ের হেনরি ল্যাবউসি কনফারেন্স রুমে আয়োজিত ‘অ্যান ইভনিং টু অনার হার এক্সিলেন্সি প্রাইম মিনিস্টার শেখ হাসিনা’ বা ‘শেখ হাসিনার সঙ্গে এক সন্ধ্যা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এই পুরুস্কার প্রদান করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর। এতে আরও বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
এই অনুষ্ঠানে ইউনিসেফের শুভেচ্ছা দূত হিসেবে উপস্থিত হয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান বিশ্বের শীর্ষ অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তার বক্তব্যের শেষ প্রান্তে দর্শক যখন করতালি মুখর, তখন ক্রিকেটপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী খেলার কথা শুনতে চান সাকিবের কাছে।
এবার জাতিসংঘে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও সাফল্য সর্বত্রই প্রশংসিত হচ্ছে, তখনি ইউনিসেফের এই পুরুস্কার পেয়ে আরও বেশি উজ্জিবিত বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বললেন- আজকে যে সার্টিফিকেট আমরা পেলাম, যে পুরুস্কার আমরা পেলাম- এটা আমার দেশের ছেলে- মেয়েদের জন্য, মানুষের জন্য যেমন আমি উৎসর্গ করছি, সাথে সাথে আমি বিশ্বের সমস্ত শিশুর জন্য উৎসর্গ করছি। এই সম্মানটা আমার একার না। সম্মানটা বাংলাদেশের। কারণ- বাংলাদেশের জনগণ ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করেছেন। তাই তাদের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি। আর এই সুযোগটা পেয়েছি বলেই- আজকে এই সম্মানটা পেয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইউনিসেফ বাংলাদেশে শিক্ষার হার বাড়াতে এবং তরুণদের দক্ষতা উন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। বিনামূল্যে বই বিতরণ কর্মসূচি, উপবৃত্তি প্রদান ও স্কুল ফিডিং কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে দেশে শতভাগ শিশু স্কুলে ভর্তি হচ্ছে। বর্তমান সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে গত এক দশকে সাক্ষরতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। তবে, শতভাগ সাক্ষরতা অর্জনের লক্ষ্যে আরও কাজ করে যেতে হবে। এক্ষেত্রে ইউনিসেফের দেওয়া এ স্বীকৃতি বাংলাদেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে আরও এগিয়ে যেতে উৎসাহিত করবে।
তরুণদের কর্মসংস্থান ও নিরাপদ বাংলাদেশ গড়তে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে সরকার, তারও ফিরিস্তি তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শিক্ষা ভাবনার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন- আমরা সব সময় বলি- শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড। শিক্ষা ছাড়া কোন জাতি মাথা উচু করে দাঁড়াতে পারে না। এটা জাতির পিতা সব সময় বলতেন। এই লক্ষ্য নিয়ে আমাদের শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেছি। কওমি মাদ্রাসাকে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে অর্ন্তভুক্ত করতে পেরেছি। আমরা সবাইকে এক জায়গাঁ করতে পেরেছে। আমরা চাই- স্কুলে টিফিনের ব্যবস্থা। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আমরা শিক্ষার্থীদের শত ভাগ উপস্থিতি নিশ্চিত করেছি।
এ সময়ে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে উপস্থিত বাংলাদেশিদের উদ্দেশ্যে বলেন, প্রাথমিক শিক্ষার এই জায়গা আমি আপনাদের চাই। যে যেই স্কুলে পড়ে এসেছেন। প্রত্যেকে যার যার স্কুলে সাহায্য- সহযোগিতা করবেন। নিজের স্কুলে সহযোগিতা করবেন। আমিও আমার স্কুলে সহযোগিতা করেছি। কাজেই সবাই সবার স্কুলে সহযোগিতা করতে হবে।
ইউনিসেফের শুভেচ্ছা দূত সাকিব আল হাসান প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন- বাংলাদেশের এই অগ্রগগতিতে চলুন আমরা সবাই একসঙ্গে এগিয়ে চলি। কারণ- সআমরা এখানে সবাই বাঙালি আছি। আমরা যদি সবাই একসঙ্গে এগিয়ে যাই, তাহলে বাংলাদেশকে অনেক দূর এগিয়ে নিতে পারবো।