মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মাহাথির মোহাম্মদের মেয়াদ পূর্ণ করা নিয়ে সে দেশের ক্ষমতাসীন দল পিপলস জাস্টিস পার্টি (পিকেআর) এ বিভক্তি দেখা দিয়েছে।
গত মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পিকেআর-এর উপপ্রধান আজমিন আলী নিজ দলের প্রধান আনোয়ার ইব্রাহিমের চেয়ে বরং মাহাথিরের প্রতিই সমর্থন ব্যক্ত করেন। বর্তমানে মালয়েশিয়ার অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন আজমিন।
তিনি বলেন, জনরায়ের প্রতি সম্মান দেখিয়ে মাহাথির মোহাম্মদকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার মেয়াদ পূর্ণ করতে দেওয়া উচিত।
২০১৮ সালের অক্টোবরে এক অনুষ্ঠানে আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে নিজের চুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে ইঙ্গিত দেন মাহাথির। এ সময় তিনি বলেন, ‘একদিন তো আমাকে পদ ছাড়তেই হবে। কিন্তু আমার উত্তরসূরি কে হবেন, তা আমি এখন বলতে পারছি না।
২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে শর্তসাপেক্ষে মাহাথিরের নেতৃত্বে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করে সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের দল পিকেআর। প্রধান শর্ত ছিল, জোটের মূল দল পিকেআর ক্ষমতায় এলে দলটির প্রধান আনোয়ার ইব্রাহিমকে কারামুক্ত করবেন মাহাথির। আর দুই বছর দায়িত্ব পালনের পর আনোয়ার ইব্রাহিমকে প্রধানমন্ত্রিত্ব বুঝিয়ে দিয়ে পদত্যাগ করবেন তিনি। কিন্তু সরকার গঠনের প্রায় দেড় বছরের মাথায় এ নিয়ে বিরোধ তৈরি হয়েছে।
নিজ দলের প্রধানের বিরুদ্ধে চক্রান্ত সম্পর্কিত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে আজমিন আলী দাবি করেন, আনোয়ার-মাহাথিরের যে চুক্তি হয়েছিল সেখানে ক্ষমতা হস্তান্তরের সুনির্দিষ্ট কোনও তারিখ উল্লেখ ছিল না।
আজমিন আলী দাবি করেন, নেতৃত্বের পরিবর্তন ঘটলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা হ্রাস পাবে। আরও অনেক সংকট তৈরি করবে। ফলে দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আশা করি আমরা সবাই নেতৃত্ব পরিবর্তনের এই পরিকল্পনা নিয়ে কথাবার্তা বন্ধ করে দেশের অর্থনীতির প্রতি মনোযোগী হবো।
এদিকে আজমিন আলীর দাবির ব্যাপারে ২৩ অক্টোবর বুধবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন পিকেআর প্রেসিডেন্ট ও দলটির প্রতিষ্ঠাতা আনোয়ার ইব্রাহিম। তিনি জানান, চুক্তি অনুযায়ী মাহাথিরের বদলে তার দায়িত্ব গ্রহণের ব্যাপারে দলীয় কাউন্সিলই সিদ্ধান্ত নেবে।
আজমিন আলীর দাবির ব্যাপারে আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, সেটি তার ব্যক্তিগত বক্তব্য। আমি সব সময় বলে এসেছি, যেকোনও সংসদীয় গণতন্ত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভার ক্ষমতাসীন দলের হাতে থাকে। অর্থাৎ, বিষয়টি আমি দলীয় কাউন্সিলের ওপর ছেড়ে দিচ্ছি।