সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর দমন-পীড়নের কারণে এবার মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর (কার্যত সরকারপ্রধান) শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সু চি’র বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে আর্জেন্টিনায়।
মামলায় তার পাশাপাশি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের বেশ ক’জন কর্মকর্তাকেও আসামি করা হয়েছে।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) এই মামলা দায়ের করে রোহিঙ্গা ও লাতিন আমেরিকান কিছু মানবাধিকার সংগঠন। রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালানোর জন্য এই প্রথম আইনি কোনো পদক্ষেপের মুখোমুখি হলেন অং সান সু চি।
মামলার আসামি হিসেবে সামরিক শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইংও রয়েছেন। এর আগে সিনিয়র জেনারেল হ্লাইংসহ তার ক’জন কর্মকর্তা একই অভিযোগে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছেন।
‘ইউনিভার্সাল জুরিসডিকশন’ বা ‘বৈশ্বিক বিচার-দায়বদ্ধতার’ আওতায় দায়ের করা মামলায় রোহিঙ্গাদের ওপর যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ তুলে বলা হয়, এ ধরনের নৃশংস অপরাধ কেবল এক জাতির প্রতি হয়নি, (বিচার না হলে) এটা যে কোথাও হতে পারে।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী তোমাস ওহেয়া বলেন, এই মামলায় অপরাধী ও তাদের সহযোগীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়েছে এবং গণহত্যার সব তথ্য প্রকাশের দাবি করা হয়েছে। আমরা আর্জেন্টিনায় এই মামলা করলাম, কারণ এভাবে মামলা দায়েরের সুযোগ আর কোথাও পাবো না।
ক’দিন আগেই রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে ‘ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস’-এ (আইসিজে) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা করে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া। ৪৬ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের গণহত্যা, ধর্ষণ ও উচ্ছেদের অভিযোগ আনে গাম্বিয়া।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০১৬ সালের অক্টোবরে রোহিঙ্গা ‘নির্মূলে’ এক অভিযান চালায় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। এ অভিযানে তারা রোহিঙ্গা হত্যা, ধর্ষণসহ বিভিন্ন যৌন নিপীড়ন চালায়। একইসঙ্গে রোহিঙ্গাদের বাড়িতে আটকে রেখে পুরো গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
আগামী ডিসেম্বরে এ অভিযোগের প্রাথমিক শুনানি শুরু হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।