ফ্রান্সে প্রথমবারের মতো উদযাপিত হয়েছে সশস্ত্র বাহিনী দিবস। প্যারিসে বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে দিবসটি উদযাপন করেছে।
এই উপলক্ষে প্যারিসের হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রতিরক্ষা বিভাগের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
দূতবাসের ডিফেন্স অ্যাটাশে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহসীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে ফ্রান্স ও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়। এরপর ডিফেন্স অ্যাটাশে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরেন।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জাতির পিতার আহ্বানে সাড়া দিয়ে সমগ্র বাঙালি মুক্তিকামী মানুষ যখন সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন, তাদের সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনীর বাঙালি সদস্যরাও যোগ দেন। ১৯৭১ সালে ২১ নভেম্বর বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স প্রথমবারের মতো কনভেনশনাল সেনা, নৌ এবং বিমান বাহিনী গঠন করে একযোগে দখলদার পাকিস্তান বাহিনীর বিরুদ্ধে সুসংগঠিত আক্রমণ রচনা করে; যার ফলশ্রুতিতে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ পৃথিবীর মানচিত্রে একটি স্বাধীন দেশ হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহসীন বলেন, ফোর্সেস গোল-২০৩০ অনুযায়ী সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়ন বর্তমান সরকারের এক বলিষ্ঠ পদক্ষেপ, যা জাতির পিতার প্রতিরক্ষা নীতিমালার আলোকেই প্রণীত হয়েছে।
ফ্রান্স সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সম্পর্ক উন্নয়নে ফ্রান্স প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আন্তরিক সহযোগিতার ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি। আশা প্রকাশ করে ডিফেন্স অ্যাটাশে বলেন, আমরা আশা করি এ সম্পর্ক আরো সুগভীর করার দৃঢ় হবে।
বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর দুটি আন্তর্জাতিকমানের প্রতিষ্ঠান ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ এবং ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজে ফ্রান্সসহ অন্যান্য দেশের অফিসারদের পাঠানোর আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রদূত কাজী ইমতিয়াজ হোসেন। তিনি বলেন, ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে প্রথম ফ্রান্সে প্রতিরক্ষা উইং প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ সরকারের ফ্রান্সের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক সুদৃঢ় করার আন্তরিক আগ্রহেরই প্রতিচ্ছবি।
তাই প্রশিক্ষণসহ যেকোনো প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বৃদ্ধিতে ফ্রান্স প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অব্যাহত আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন রাষ্ট্রদূত।
চলতি বছর ৩০ মে ফ্রান্সের প্যারিসের বাংলাদেশ দূতাবাসে প্রতিরক্ষা শাখার কার্যক্রম শুরু হয়। এতে প্রথম প্রতিরক্ষা অ্যাটাশে নিযুক্ত হয়েছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মোহসীন।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, প্রতিরক্ষা অ্যাটাশে, ফ্রান্স সশস্ত্র বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা, পুলিশ, সুশীল সমাজ ও বাংলাদেশ কমিউনিটির প্রায় দুইশত অতিথি উপস্থিত ছিলেন।