আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন ইরাকি প্রধানমন্ত্রী আদেল আবদুল মাহদি।এরপরও দেশটিতে বিক্ষোভ থামেনি।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) ইরাকি পার্লামেন্টে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন। এর আগে অক্টোবর থেকে চলে আসা বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) আদেল আবদুল মাহদি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এক লিখিত বিবৃতির মাধ্যমে তার পদত্যাগের কথা জানান।
শনিবার ইরাকের মন্ত্রীসভার এক জরুরি বৈঠকের তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন।
রোববার (১ ডিসেম্বর) ইরাকি পার্লামেন্টে এক জরুরি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। যেখানে পার্লামেন্ট সদস্যরা আবদুল মাহদির পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা বা না করার বিষয়ে আলোচনা করবেন।
শুক্রবার ইরাকের শীর্ষ শিয়া নেতা আয়াতুল্লাহ আলী আল-সিস্তানি সরকারের ওপর সমর্থন প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর ইরাকি প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছিলেন।
এদিকে পদত্যাগ সত্ত্বেও ইরাকে বিক্ষোভকারীরা তাদের আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন। তারা বলছেন, রাজনৈতিক অবস্থার সম্পূর্ণ পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত তারা বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন।
শনিবার দেশটিতে বিক্ষোভে তিনজন নিহত ও ৬০ জনের মতো আহত হওয়ার খবর জানায় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।
এরমধ্যে দেশের দক্ষিণে অবস্থিত শিয়াদের পবিত্র নগরী নাজাফে শনিবারের বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে তিন বিক্ষোভকারী নিহত ও ২৪ জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
নিরাপত্তা বাহিনী ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, ধর্মীয় নেতা মুহাম্মদ বাকির আল-হাকিমের মাজারের সামনে বিক্ষোভকারীদের সমাবেশে নিরাপত্তা বাহিনী গুলি করলে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।এসময় বিক্ষোভকারীরা মাজারের সামনে আগুন ধরিয়ে দেয়।
এদিকে রাজধানী বাগদাদে কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ স্থান আহরার সেতুতে বিক্ষোভকারীদের এক সমাবেশে নিরাপত্তা বাহিনী গুলি করলে ১১ বিক্ষোভকারী আহত হন।
শুক্রবারের রক্তাক্ত বিক্ষোভের পর শনিবারও বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে দক্ষিণাঞ্চলীয় নাসিরিয়া শহরে। শহরের কেন্দ্রের সঙ্গে সংযোগকারী যাইতুন ও নাসর সেতুতে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হলে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছেন।
১ অক্টোবর থেকে ইরাক জুড়ে উন্নত জীবনব্যবস্থা ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাপনা এবং দুর্নীতির অবসানের দাবিতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। চলমান এ বিক্ষোভে এ পর্যন্ত চারশ’র বেশি বিক্ষোভকারী নিহত ও ১৫ হাজারের বেশি আহত হয়েছেন।