মালয়েশিয়ায় দুই শতাধিক অবৈধ বাংলাদেশিদের স্পেশ্যাল পাশ সংগ্রহ করেছে হাইকমিশন।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে পুত্রজায়া ইমিগ্রেশন থেকে দুটি বাস ৮৫ জনকে নিয়ে রওয়ানা দেয় পেরাক ইমিগ্রেশনে এবং অপর দুটি বাস ৮৬ জনকে নিয়ে রওয়ানা দেয় কুয়ানতান ইমিগ্রেশনে।
মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের তৎপরতায় ফ্রি বাস এবং অনিশ্চয়তায় থাকা নাগরিক সেবা পেয়ে খুশি।
মালয়েশিয়া সরকার ঘোষিত ব্যাক ফর গুড কর্মসুচির আওতায় ১ আগস্ট থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত শুধু ৭০০ রিংগিত জরিমানা দিয়ে ইমিগ্রেশনের স্পেশাল পাস নিয়ে দেশে ফেরার সহজ সুযোগ নিতে প্রতিদিন বিভিন্ন দেশের শত শত নাগরিক ইমিগ্রেশনে ভিড় জমান। এভাবে শেষ তারিখ যতই ঘনিয়ে আসতে থাকে ততই ভীড় বাড়তে থাকে। ফলে স্পেশ্যাল পাশ পাবার সুযোগ সীমিত হয়ে আসে। অনেকের ফ্লাইট ভ্রমণের তারিখ উত্তীর্ণ হবার পথে। এ অবস্থায় পুত্রজায়া ইমিগ্রেশনে অপেক্ষমান নাগরিকের হতাশা নেমে আসে। শেষ মুহুর্তে হাইকমিশনার মহ.শহীদুল ইসলামের নির্দেশে হাইকমিশনের কর্মকর্তারা ইমিগ্রেশনের সাথে পরামর্শ করে ইপু- পেরাক ও কুয়ান্তান ইমিগ্রেশনে অবৈধ বাংলাদেশি কর্মীদের নিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
শুক্রবার অপেক্ষমানদের মধ্য থেকে যাদের ফ্লাইট খুব নিকটে এমন অপেক্ষমানদের তালিকা প্রস্তুত করে তাদের নিয়ে ৪ টি বাস রওয়ানা করে ইপু-পেরাক ও কোয়ান্তান ইমিগ্রেশনে।
পেরাক টিমের সূত্রে জানা গেছে, আগের দিন ১০০ জনের জন্য ঠিক করা হলেও জরুরি ফ্লাই করতে হবে এমন ৯০ জনকে নিয়েই পেরাক ইমিগ্রেশনে স্পেশাল পাস সংগ্রহ করা হয়েছে।
কুয়ান্তান টিম সূত্রে জানা গেছে, যাদের লাইট খুব নিকটে এমন ৮৬ জনকে পাওয়া যায়, তাদের নিয়ে সকালে রয়ানা করে দুপুরে কুয়ান্তান ইমিগ্রেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অপেক্ষমান ১৭ জনকে পাওয়া যায়, তাদেরকেও যুক্ত করে মোট ১০৩ জনের স্পেশ্যাল পাস সংগ্রহ করা হয়েছে। তাদের সবাইকে ফিরতি বাসে কুয়ালালামপুর পৌছে দেওয়া হয়।
পেরাক টিমে ছিলেন, হাইকমিশনের ২য় শ্রম সচিব ফরিদ আহমেদ এবং কুয়ানতান টিমে ছিলেন কাউন্সেলর শ্রম ২ মোঃ হেদায়েতুল ইসলাম মন্ডল।
এদিকে দেশটির ইমিগ্রেশনের ৮০ কাউন্টারে রাত পর্যন্ত সেবা প্রদান করছে অভিবাসন বিভাগ। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ব্যাপক উপস্থিতির কারণেই এই সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানালেন পেনাং ইমিগ্রেশনের প্রধান।
ব্যাক ফর গুড কর্মসুচিতে সব থেকে বেশি উপস্থিতি পুত্রাজায়া, সেলাঙ্গর, পেনাং, জোহর বারুতে।
অবৈধ অভিবাসীদের উপস্থিতিতে ইমিগ্রেশন পুলিশের হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে শেষ মুহূর্তে বাংলাদেশীদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো।
কিন্তু টিকিটের উচ্চ মূল্যেও কড়া সমালোচনা করছেন অনেকে। কিশোরগন্জের সোহরাব জানা , শেষ মুহূর্তে বিমানের টিকিট কাটলাম ৩৫ হাজার টাকা দিয়ে। ২৯ ডিসেম্বর রবিবারে ফ্লাইট। হাইকমিশনের এ মহতি উদ্যোগে আজ সোপশাল পাস হাতে পেলাম ইপু-পেরাক ইমিগ্রেশন থেকে। স্পেশাল পাস আজ না পেলে আমার যাওয়া হতনা।
চলতি বছরের ১ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত ইতোমধ্যেই দেশে ফিরেছেন ৪০ হাজারের বেশি বাংলাদেশি।
এদিকে এই সুযোগ বাড়ানো হবে একটি গুজব ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্রই। ইমিগ্রেশন বিভাগের প্রধান দাতুক খায়রুল দাজাইমি দাউদ সাংবাদিকদের বলেছেন, এই সুযোগ আর বাড়ানো হবে না এবং ১ জানুয়ারি থেকে অবৈধ অভিবাসীদের আটকে চিরুনি অভিযান পরিচালিত হবে।