বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা: বিএনপির অতি আপনজন হিসেবে পরিচিত ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী হঠাৎ কেন ক্ষেপে গেলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ওপর ? তারেককে দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে পড়াশুনা করার আহবান জানিয়েছেন তিনি। ডা. জাফরুল্লাহ বলেছেন, লন্ডন থেকে স্কাইপির মাধ্যমে “ওহি” পাঠিয়ে মাকে( খালেদা জিয়া) মুক্ত করা বা দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব না। দেশের কাউকে দায়িত্ব দেবারও আহবান জানান তিনি। তবে তারেক ভক্ত বিএনপি ঘরানার এই বুদ্ধিজীবি হঠাৎ করেই এ ধরনের মন্তব্য করায় রাজনৈতিক মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে।

সোমবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবন মিলনায়তনে ”বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার কোন পথে ” শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন জানান। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে ন্যাশনাল ল’ইয়ার্স কাউন্সিল (এনএলসি)।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, তারেক আমার খুব প্রিয় মানুষ। ছোটবেলা থেকেই তাকে দেখেছি। সেই জন্য তাকে বলি, এতদূর থেকে বসে তোমার মায়ের মুক্তি ঘটাতে পারবে না। তুমি প্লিজ ওখানে বসে দু’বছর মার্স্টার্স বা এমফিল করো। এখানে (বাংলাদেশে) যারা আছে তাদের কাউকে দায়িত্ব দিয়ে দাও। আর এখানে স্থায়ী কমিটির যাদের হাত, পা ধরে আসে; দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না, তাদের বাড়িতে পাঠাও। তারা এসে দু’ঘণ্টা দাঁড়াতে পারেন না, এরা বাড়িতে বসেই রাজনীতি করুক। 

তারেকের উদ্দেশে তিনি বলেন, সব ব্যাপারে নাক গলানো বন্ধ করতে হবে। ওহি দেওয়া, স্কাইপ দেওয়া বন্ধ কর তাহলে সাধারণ মানুষ তোমার মাকে কারামুক্ত করবে। এটাও সত্য কথা, খালেদা জিয়ার মুক্তি না হলে গণতন্ত্রের মুক্তি প্রায় অসম্ভব। তবে তাকে মুক্ত করার দায়িত্ব তো আমাদেরই। শুধু হলে বসে বক্তৃতা দিয়ে নয়, মাঠে যেতে হবে। 

অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিএনপির নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারাও ওহি দ্বারা পরিচালিত হচ্ছেন। এটাই এই জাতির চরম দুর্ভাগ্য। আপনাদের ওহি আসছে লন্ডন শহর থেকে, স্কাইপের মাধ্যমে। আপনারা এটা ছাড়েন। আপনাদের মাঝে চৌকস কিছু নেতা আছে, তাদেরকে দায়িত্ব দিয়ে দেন। দেখবেন দেশবাসী আপনাদের পাশে আছে। আপনাদের প্রায় ১ লাখ কর্মী বর্তমানে জামিনে আছেন। পাটকল শ্রমিকরা যেমন এই শীতের মাঝেও কম্বল গায়ে বসে আছেন আপনারাও অন্তত দুটো দিন হাইকোর্টের মাঠে বসে থাকুন না, দেখুন আমাদের বিচারপতিদের বুকে সাহস আছে কিনা, তারা (বিচারপতিরা) ন্যায়ের জন্য দাঁড়ায় কিনা, তাদের (বিচারপতি) মনে এক মূহূর্তের জন্য জাগে কিনা এই জনতার মঞ্চে তাদের (বিচারপতিদের) বিচার হবে। তাই আপনারা এই ওহির ভরসা ছাড়েন।

এসময় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাবেক সাংসদ এহসানুল হক মিলন ও গোলাম মওলা রনি, সমিতির সাবেক সহসভাপতি গোলাম রহমান ভূঁইয়া প্রমুখ।