logo
আপডেট : 27 February, 2020 12:47
মালয়েশিয়ান সিভিল সার্ভেন্টদের রাজনীতি থেকে দূরে থাকার নির্দেশ
আহমাদুল কবির, মালয়েশিয়া

মালয়েশিয়ান সিভিল সার্ভেন্টদের রাজনীতি থেকে দূরে থাকার নির্দেশ

মালয়েশিয়ান সিভিল সার্ভেন্টদের রাজনীতি থেকে দূরে থাকার নির্দেশনা প্রদান করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। দেশটির জাতীয় দৈনিক দিষ্টারে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, বর্তমানে মালয়েশিয়ার উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মালয়েশিয়ান সিভিল সার্ভিসের রাজনীতি ও পক্ষপাতিত্ব থেকে দূরে থেকে জনগণকে সর্বোত্তম সেবা প্রদানে সিভিল সার্ভিসের প্রফেশনাল এবং রাজনৈতিক সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বুধবার প্রধানমন্ত্রী ডিপার্টমেন্ট থেকে সেদেশে সিভিল সার্ভিসের স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে যে তাদের দায়-দায়িত্ব জনগণের প্রতি।

বলা হয়েছে, আপনি যে সার্ভিস দিবেন সেটা যেন সর্বোত্তম নীতিতেই দেওয়া হয়। সার্ভিসের মাধ্যমেই দেশের জনগণের আস্থা ধরে রাখতে হবে। এর কারণ জনগণের উচ্চ আশা আছে সিভিল সার্ভিসের প্রতি। পরিবর্তন একটি কঠোর এবং জটিল প্রক্রিয়া কিন্তু দেশের চিফ সেক্রেটারির নেতৃত্বে ১.৬ মিলিয়ন সার্ভেন্ট তাদের দায়িত্ব পালন করছে, যা বিশ্বস্থতা দায়িত্বশীলতার দক্ষতা এবং কোন ভুল ও বিভ্রান্তিকর নেতিবাচক ধারণা ছাড়াই। সিভিল সার্ভেন্ট সব সময় প্রস্তুত থাকবে ভালোভাবে একটি সুন্দর যোগাযোগ এবং পারস্পারিক কার্য প্রক্রিয়া অনুসরণ করে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানিয়ে নিবে। এটাই মালয়েশিয়া প্রশাসনের শক্তি। সেখানে আরও বলা হয়েছে সিভিল সার্ভিসের অবশ্যই সব সময় অভিযোজন ক্ষমতা, ধারণক্ষমতা থাকতে হবে। তার দায়িত্বশীলতার থেকে এবং জনগণের যে প্রত্যাশা আছে সরকারের যে প্রত্যাশা আছে সেটাকে ধারণ করতে হবে ।  অনুশাসনে বলা হয়েছে যে রাজনীতি থেকে দূরে থেকে নিজের প্রফেশনালিজম এবং ইন্টিগ্রিটি সমুন্নত রাখার জন্য এবং কোনো পক্ষপাতিত্ব ছাড়াই সর্বোচ্চ এবং সর্বোত্তম সেবা প্রদানের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, বর্তমানে মালয়েশিয়ার রাজনৈতিক দোলাচালে দুলছে। ২০১৮ সালে নতুন জোট সরকার গঠন করে। এর ২২ মাস পর আনোয়ার ইব্রাহিমের পাকাতান হারাপান জোট থেকে মাহাথিরের দল পিপিবি এম এবং আনোয়ার ইব্রাহিমের দলের ১১ জন এমপি  জোট থেকে বের হলে সংকট সৃষ্টি হয়।

ইতোমধ্যে মাহাথির মোহাম্মদ প্রধানমন্ত্রীর পদ ত্যাগ করলে কেবিনেট এর সকল উপপ্রধান মন্ত্রী, মন্ত্রী, উপমন্ত্রী ও রাজনৈতিক নিয়োগের অবসান ঘটে। তারপ্রেক্ষিতে দেশটির রাজা মাহাথির কে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেছেন। নতুন সরকার গঠনের জন্য রাজা সকল সংসদ সদস্যের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। সংখ্যা গরিষ্ঠ দল বা জোট সরকার গঠন করবে। সরকারের সকল সারিভিস অব্যাহত রাখা , জনগণকে শান্ত ও সচেতন থাকার জন্য পুলিশ অনুরোধ করেছে। প্রেস বা মিডিয়া দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছে। ফলে অতিরঞ্জিত কোন খবর অশান্ত করছে না। রাষ্ট্রের সকল বিভাগ দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছে বলে দপ্তর জানিয়েছে।

এ দিকে দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী তুন ডাঃ মাহাথির মোহামাদ বলছেন, "সঠিকভাবে বা ভুলভাবে রাজনীতি এবং রাজনৈতিক দলগুলিকে আপাতত আলাদা রাখতে হবে"।

“যদি অনুমতি দেওয়া হয় তবে আমি একটি নির্দলীয় প্রশাসন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করব যা কোনও পক্ষকেই সমর্থন করে না। শুধুমাত্র জাতীয় স্বার্থকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হবে, এটাই আমি করার চেষ্টা করব, ”বুধবার জাতির উদ্দেশ্যে টেলিভিশন ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

মাহাথির, রাজনৈতিক সঙ্কটের বিষয়ে নীরবতা ভঙ্গ করে গত সোমবার তাঁর আকস্মিক পদত্যাগের কারণ হিসাবে যোগ করেছেন, রাজনীতিবিদ এবং রাজনৈতিক দলগুলি রাজনীতির প্রতি এতটা উন্মত্ত হয়ে পড়েছিল যে তারা দেশকে জর্জরিত অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্য বিষয়গুলিকে উপেক্ষা করেছে।

“আমি অনেকের কাছে পছন্দ হতে চাই না। আমি কেবল এমন কিছু করছি যা আমি দেশের পক্ষে ভাল বলে মনে করি।

আজ বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) স্থানিয় সময় সকাল ১১ টায় রাজার সাথে বৈঠক করেছেন তুন মাহাথির।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় নিশ্চিত করেছে যে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রীকে ইয়াং ডি-পেরিটুয়ান আগং আল-সুলতান আবদুল্লাহ রিয়াতউদ্দীন আল-মুস্তফা বিল্লাহ শাহের সাথে দেখা করার জন্য তলব করা হয়েছিল।

তুন মাহাথির ছাড়াও প্রধান বিচারপতি টেংকু মাইমুন তুয়ান ম্যাটকেও প্রাসাদে ডেকে আনা হয়েছে।