ইউরোপগামী সিরীয় শরণার্থীদের থামাবে না তুরস্ক। উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় ইদলিব প্রদেশে সিরীয় সরকারি বাহিনীর হামলায় ৩৩ তুর্কিশ সেনা নিহত হওয়ার পর এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
দেশটির এক শীর্ষ কর্মকর্তা এই তথ্য জানিয়েছেন।
শুক্রবার দিনের প্রথমভাগেই শরণার্থী ও অভিবাসীরা সীমান্ত চৌকির দিকে অগ্রসর হয়েছেন। কর্মকর্তারা বলেন, কাজেই তাদের আটকানোর ক্ষেত্রে পুলিশ ও সীমান্ত প্রহরীদের বিরত থাকতে এবং সমুদ্র ও স্থলপথ হয়ে তাদের বের হওয়ার সুযোগ দিতে বলা হয়েছে।
সকালের আলো ফোটার আগেই পায়ে হেঁটে সীমান্তের দিকে রওনা দিয়েছেন শরণার্থীরা। ইস্তানবুলের উপকণ্ঠে একটি মহাসড়কে টেক্সিযোগে রওনা দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তারা।
আফগান অভিবাসী সাহিন নেবিজাদি বলেন, আমরা টেলিভিশনে এমন খবর শুনেছি। আমরা ইস্তানবুলে বসবাস করছি। এখন আমরা এডিরন হয়ে গ্রিসে যাব।
এতে ২০১৫-২০১৬ সালের মতো শরণার্থী সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তখন গ্রিসের সমুদ্র হয়ে ১০ লাখ লোক ইউরোপমুখে যাত্রা করেছিল। এছাড়াও বলকান হয়ে পায়ে হেঁটে তারা সীমান্ত অতিক্রম করেন।
পরে ইউরোপের সঙ্গে চুক্তি অনুসারে সীমান্ত বন্ধ ঘোষণা করে তুরস্ক। বৃহস্পতিবার রাতে সিরিয়ার ইদলিবে তুরস্কের সেনাঘাঁটিতে বাশার আল-আসাদ বাহিনীর হামলায় ৩৩ তুর্কি সেনা নিহতের পর থেকে ওই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
গত ৯ বছর ধরে গৃহযুদ্ধে জর্জরিত সিরিয়ার সঙ্গে তুরস্কের যুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।
তুরস্কের সেনাঘাঁটিতে হামলার পর শুক্রবার এরদোগানের দলের মুখপাত্র ওমর কেলিক বলেন, তুরস্কের পক্ষে শরণার্থীদের আর ধরে রাখা সম্ভব না।
সিএনএন তুর্ককে তিনি বলেন, ওই হামলার কারণেই তুরস্কের শরণার্থীরা ইউরোপে রওয়ানা হয়েছে। এছাড়া যেসব শরণার্থী এখনো সিরিয়ায় আছে, তারাও তুরস্কে আসতে শুরু করেছে।
তিনি বলেন, আমাদের শরণার্থী নীতিতে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি, সেটা আগের মতোই আছে। কিন্তু এখন আমরা এমন পরিস্থিতিতে পড়েছি যে, আমাদের পক্ষে আর তাদের ধরে রাখা সম্ভব না।
ডিসেম্বর পর্যন্ত তুর্কিশ সীমান্তের কাছে সিরিয়ার ভেতরে ১০ লাখ বেসামরিক লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। প্রচণ্ড ঠাণ্ডার মধ্যে তাদের মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে।
তুরস্ক ইতিমধ্যে তিন লাখ ৭০ হাজার শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছেন। তারা আর শরণার্থীর বোঝা বহন করতে পারবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে।