মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চির সম্মাননা এবার কেড়ে নিল লন্ডন সিটি কর্পোরেশন (সিএলসি)। রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়নের ঘটনাকে সামনে এনে বৃহস্পতিবার এমন সিদ্ধান্তের কথা জানায় শহর কর্তৃপক্ষ।
লন্ডনের ঐতিহাসিক ও অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো পরিচালনা করা সিএলসি কর্তৃপক্ষের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ভোটে সু চির সম্মাননা বাতিল করা হয়। আলজাজিরা।
২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর পর পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোগত সহিংসতা জোরদার করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। হত্যা, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের বাস্তবতায় জীবন বাঁচাতে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। এর বিপরীতে সু চি কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেননি। বরং গণহত্যার কথা অস্বীকার করে সেনাবাহিনীর হত্যাযজ্ঞের পক্ষে সাফাই গেয়ে আসছেন তিনি। এ কারণে তিনি গণতান্ত্রিক মিয়ানমারের পক্ষে তার সংগ্রামের স্বীকৃতি হিসেবে পাওয়া প্রায় সব সম্মাননা হারিয়েছেন একসময়ের এশিয়ার ম্যান্ডেলা খ্যাত সু চি।
সু চি সর্বশেষ গতবছর ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) নিজ দেশের সেনাবাহিনীর গণহত্যার পক্ষে সাফাই গাইতে হাজির হন। এতে নিজের অর্জিত আন্তর্জাতিক সম্মানের শেষটুকুও নষ্ট করেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, আইসিজে মিয়ানমারকে গণহত্যা মামলায় অভিযুক্ত করার পর সু চি এখন কেবলই একজন ক্ষমতালিপ্সু স্বৈরাচার, যিনি ক্ষমতা ধরে রাখার স্বার্থে নিজ দেশের সামরিক বাহিনীর গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের পক্ষে দাঁড়ান। ডিসেম্বরে হেগে আন্তর্জাতিক আদালতে রোহিঙ্গা ইস্যুতে গাম্বিয়ার করা মামলার শুনানিতে সু চির অবস্থানের পর সম্মাননাটির জন্য তিনি যোগ্য নন বলে একমত হয় সিএলসি। শুনানিতে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের গণহত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগের অভিযোগ অস্বীকার করেন শান্তিতে নোবেলজয়ী এ বিতর্কিত নেত্রী। এর আগে কানাডার পার্লামেন্টের দেয়া সম্মানসূচক নাগরিকত্ব, ব্রিটেনের অক্সফোর্ড শহরের দেয়া সম্মাননা, গ্লাসগো নগর কাউন্সিলের দেয়া ফ্রিডম অব সিটি খেতাব, লন্ডনভিত্তিক সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দেয়া সম্মাননা হারিয়েছেন সু চি।
হারালেন যুক্তরাজ্যের সন্মাননা
যুক্তরাজ্যের একটি সন্মাননাও হারিয়েছেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি। দেশটির লন্ডন পৌর কর্পোরেশন (সিএলসি)-এর দেয়া ওই সন্মাননা কেড়ে নেয়া হয়।
মিয়ানমারে রোহিঙ্গা শরণার্থী ইস্যুতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে বৃহস্পতিবার এ সন্মাননা কেড়ে নেওয়া হয়। পৌর কর্পোরেশনের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা তিন বছর আগে অং সান সু চিকে এ পদক দেন।