দীর্ঘ ২ বছর ১ মাস ১৭ দিন (৭৭৬ দিন) পর কারা হেফাজত থেকে মুক্তি পেলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
বুধবার (২৫ মার্চ) বিকেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) থেকে তিনি মুক্তি পান। দুপুর ৩টা ৫ মিনিটের দিকে খালেদাকে আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তি দেওয়া হয়।
বিএসএমএমইউ হাসপাতালে খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর খালেদা জিয়াকে গ্রহণ করেন। এর আগে খালেদা জিয়ার রুমের ভেতরে যান ভাই শামীম ইস্কান্দার, ভাইয়ের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা, ভাইয়ের ছেলে অভিক ইস্কান্দার, তারেক রহমানের স্ত্রীর বড় বোন শাহিনা জামান খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও শামা ওবায়েদ। ৪টা ২০ মিনিটে তাকে গাড়িতে তোলা হয়। ৪টা ২৫ মিনিটে গাড়ি বের হয়ে গুলশানের পথে রওয়া হয়।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, সহ-প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীমসহ কয়েকশ দলীয় নেতাকর্মী।
এর আগে দুপুর আড়াইটার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) খালেদা জিয়ার মুক্তির চিঠি নিয়ে যান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার ইকবাল কবির চৌধুরী।
দীর্ঘ ২ বছর ১ মাস ১৭ দিন পর মুক্তি পেলেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। এর আগে মঙ্গলবার খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে তাকে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
এদিকে, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আগামী কয়েক দিন নিজ বাসায় কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
সন্ধ্যায় গুলশানের ফিরোজা ভবনে সদ্য মুক্তি পাওয়া খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, মির্জা আব্বাস, বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান।
সাক্ষাৎ শেষে বেরিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, ওনার চিকিৎসার জন্য মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা ইতিমধ্যে ওনার বাসায় গিয়েছেন। তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে। আপাতত কিছুদিনের জন্য ম্যাডামকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে। ডাক্তাররা এ বিষয়ে আলোচনা করবেন।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাবন্দি হন খালেদা জিয়া।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিচারিক আদালত ৫ বছরের সাজা দেয়, পরে আপিলে সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করে দেওয়া হয়। আর জিয়া চ্যারিটেবল মামলায় বিচারিক আদালত ৭ বছরের সাজা দেয়। এই মামলাটি এখন হাইকোর্টে রয়েছে। বাকি ৩৪টি মামলায় জামিনে আছেন খালেদা জিয়া।
গত বছর ১ এপ্রিল অসুস্থতার কারণে তাকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এক প্রায় এক বছর কারা হেফাজতে তিনি সেখানে ভর্তি ছিলেন।