করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কোনো প্রবাসী বাংলাদেশি মারা গেলে সরকার তার পরিবারকে তিন লাখ টাকা দেবে।
বুধবার (১৫ এপ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, করোনাভাইরাসের পরিপ্রেক্ষিতে বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিয়ে করণীয় নির্ধারণে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কোনো প্রবাসী বাংলাদেশি মারা গেলে তার পরিবারকে তিন লাখ টাকা দেওয়া হবে। এছাড়া কোনো প্রবাসী নাগরিক ঢাকায় পৌঁছালে যাতায়াতের জন্য তাকে দেওয়া হবে পাঁচ হাজার টাকা। আর প্রবাসী নাগরিকরা দেশে পৌঁছানোর পর পরবর্তী সময়ে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা ঋণ সহায়তা পাবেন। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় এ অর্থ দেবে।
বৈঠকে আরো সিদ্ধান্ত হয়, বিদেশ থেকে বাংলাদেশে আসার পর চার হাজার প্রবাসী নাগরিক যেন একসঙ্গে কোয়ারেন্টাইনের প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা পান, সে ব্যবস্থা করবে সরকার। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ঢাকা ও আশপাশের জেলায় এই কোয়ারেন্টাইন সুবিধা নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশে ফেরার পর তাদের কোয়ারেন্টাইন সুবিধা নিশ্চিতে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একসঙ্গে কাজ করবে। একই সময়ে যেন চার হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিককে কোয়ারেন্টাইনে রাখা যায়, সেজন্য ঢাকা ও আশপাশের জেলায় প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার গড়ে তোলা হবে।
এছাড়া ঢাকার বিমানবন্দরে বিভিন্ন দেশ থেকে বিশেষ ফ্লাইটে প্রবাসীরা এলে সেখান থেকে খুব সহজেই যেন এসব সেন্টারে নিয়ে যাওয়া যায়, সে কাজে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সমন্বয় করবে।
বৈঠকে আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, কুয়েতের জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলায় সে দেশকে সহায়তার জন্য বাংলাদেশ খাদ্য, ওষুধ, চিকিৎসা সামগ্রী ও মেডিক্যাল টিম পাঠাবে। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর মেডিক্যাল প্রতিনিধি দল তাদের সহায়তা দেবে। এছাড়া ভুটানে ওষুধ ও চিকিৎসা সহায়তা দেবে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে মালদ্বীপে ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী পাঠানো হয়েছে বলে জানানো হয়। আর সংযুক্ত আরব আমিরাত বাংলাদেশ থেকে খাদ্যসামগ্রী আমদানি করার জন্য আগ্রহ দেখিয়েছে বলে অভিহিত করা হয়।
বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদ, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাহফুজুর রহমানসহ বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা অংশ নেন।
এর আগে গত ৫ এপ্রিল প্রবাসীদের দেশে ফেরত আনা সম্পর্কিত প্রথম বৈঠকটি প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে ও দ্বিতীয় বৈঠকটি ৯ এপ্রিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।