মালয়েশিয়ায় মানবপাচার রোধে সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে দেশটি। পাশাপাশি ভূখন্ডে অবৈধ প্রবেশ ঠেকাতে জিরো টলারেন্স নীতিতে এগুচ্ছে সে দেশের সরকার।
গত ৮ জুন মালয়েশিয়ার নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় উপকূলীয় লঙ্কাওয়ি দ্বীপের কাছে একটি ক্ষতিগ্রস্ত নৌকা থেকে ২৬৯ রোহিঙ্গাকে আটক করারপর থেকে সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
এ দিকে মালয়েশিয়ায় মানব পাচার সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত থাকায় পুলিশ ও সশস্ত্র বাহিনীর প্রায় ডজন খানেক সদস্যকে চিহ্নিত করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৮ জনকে।
মানব পাচারকারী সিন্ডিকেট ও তাদের সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে ১৯ জুন শুক্রবার পুলিশ মহাপরিদর্শক তান শ্রী আবদুল হামিদ বদর জানিয়েছেন।
আবদুল হামিদ বলেছেন, পুলিশ ও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত থাকায়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতুক সেরি হামজাহ জয়নুদিন এবং সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান জে: তান শ্রী আফেন্দি বুয়াংকে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে।
স্থানিয় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ মাহাপরিদর্শক বলেন, জোহর পুলিশ ২০১৭ সাল থেকে একাধিক মানব পাচার সিন্ডিকেটকে সহায়তা করছে বলে ধারণা করা হয়েছে এমন ১৮ টি প্রয়োগকারী কর্মীকে ১৫ থেকে ১৮ জুনে পরিচালিত একটি বিশেষ অভিযানে এদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে।
রাজ্য পুলিশ প্রধান দাতুক আইওব খান মায়দিন পিচ্চা বলেছেন, কিছু কর্মী সিন্ডিকেট দ্বারা বেতন প্রদান করছিল যারা জোহরের পূর্ব উপকূল ব্যবহার করে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করত। আর এ কাজে জড়িত একজন কর্মী নগদ ১০ হাজার রিঙ্গিত পেত।"
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- পাঁচজন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য এবং ১৩ জন পুলিশের মধ্যে, সমুদ্র পুলিশ দুজন, বুকিত আমানের দুজন এবং কোটা টিঙ্গি থানার নয়জন।
গ্রেপ্তারকৃত পুলিশ সদস্যদের একজন সহকারী পুলিশ সুপার পদে রয়েছেন এবং জোহরের ১৩ টি জেলা পুলিশ সদর দফতরের একটিতে ছিলেন।
এদিকে, জে: আফেন্দি বলেছেন, সশস্ত্র বাহিনী কোনও অপরাধমূলক কার্যক্রমে জড়িত বলে প্রমাণিত কোনও কর্মকর্তা বা কর্মচারীর সাথে আপস করবে না। “আমাদের অবশ্যই এই বিষয়ে দৃঢ় ও কঠোর হতে হবে কারণ অপরাধীদের পদক্ষেপগুলি সশস্ত্র বাহিনীর ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে। "মানব পাচার সিন্ডিকেটগুলির সাথে যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আরও ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখছে"।
জে: আফেন্দি বলেন, দেশের সীমান্ত সুরক্ষা জোরদার করতে প্রয়োগকারী ও সুরক্ষা সংস্থাগুলির সংহতি দেখায় এবং সামরিক কর্মী এবং কর্মকর্তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে স্বচ্ছতা ও অখন্ডতা উন্নত করে," ।
মালয়েশিয়ার সিনিয়র মন্ত্রী ইসমাইল সাবরি এক বিবৃতিতে বলেছেন, মানব পাচার রোধে দেশে অবৈধ প্রবেশ এবং সে দেশে অবস্থানরত অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেপ্তারের অংশ হিসেবে দেশজুড়ে ৬১ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। আমরা অবৈধ প্রবেশ ঠেকাতে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছি। যার কারণে দেশের বিভিন্ন সীমান্তের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ও সড়কগুলোতে অভিযান চলছে। আমরা আমাদের দেশে অবৈধ অভিবাসীদের ব্যবহার করতে দিতে পারি না। অবৈধ প্রবেশের পথ বন্ধ করে দেওয়া হবে এবং যারা অবৈধভাবে অবস্থান করছে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হবে।