logo
আপডেট : 21 June, 2020 09:20
জর্জ ফ্লয়েড হত্যা: বিচারের দাবিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বাসভবন ঘেরাও

জর্জ ফ্লয়েড হত্যা: বিচারের দাবিতে  প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বাসভবন ঘেরাও

ম্যানহাটনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বাসভবন ”ট্রাম্প টাওয়ার” ঘেরাওয়ের সময় পুলিশী বাঁধার মুখে বিক্ষোভকারীরা-Photo by Sanaul Haque

তুহিন সানজিদ, নিউ ইয়র্ক:

কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েড হত্যার বিচারের দাবিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিউ ইয়র্কের বাসভবন ঘেরাও করেছে বিক্ষোভকারীরা। শনিবার বিকেল বিকেলে ”রিফিউজ ফেসিজম” নামের একটি সর্বদলীয় সংগঠনের ডাকে কয়েক হাজার মানুষ এই ঘেরাও এবং বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেয়। বিক্ষোভে কৃষ্ণাঙ্গদের সাথে এশিয়ান ছাড়াও বিপুল সংখ্যক শ্বেতাঙ্গ নারী-পুরুষ অংশ নেয়।
বিক্ষোভকারীরা ম্যানহাটনের ফিফথ এভিনিউ ও ৫৭স্ট্রিটে পৌঁছালে শতাধিক পুলিশ তাদের আটকে দেয়। ট্রাম্পের বাসভবনটি ৫৬এবং ৫৭স্ট্রিটের মাঝখানে। সেখানে তিন স্তরের লোহার বেরিকেড দেয়া ছিল আগে থেকেই। বাঁধা পেয়ে সেখানেই বসে পড়ে বিক্ষোভকারীরা। এসময় “ট্রাম্প-পেন্স আউট নাউ” স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে গোটা এলাকা। বিক্ষোভকারীরা মিনিয়াপোলিসে পুলিশের হাতে নিহত কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েড হত্যার বিচার এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পদত্যাগ দাবি করে। এসময় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে বর্ণবাদী হিসেবে আখ্যায়িত করে  আমেরিকায় বর্ণবাদ বৈষম্যের অবসান এবং শ্বেতাঙ্গ ও কৃষ্ণাঙ্গদের সবখানে সমান অধিকার দাবি করেন। কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েড হত্যার পর বিচারের দাবিতে রাজপথে নেমে আসা বিক্ষোভকারীদের সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য এবং বিক্ষোভ দমনে সেনা মোতায়েন করার ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন তারা। 

জর্জ ফ্লয়েড হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভকারীরা ম্যানহাটনে ট্রাম্পের বাসভবন ”ট্রাম্প টাওয়ার” ঘেরাও করে। বাবা-মায়ের সাথে এই শিশু দুইটিও এসেছিল বিক্ষোভ মিছিলে। ট্রাম্প টাওয়ারের সামনে প্রচন্ড গরমে ক্লান্ত এক শিশুপানির বোতল এগিয়ে দিচ্ছে আরেক শিশুকে-Photo by Tuhin Sanzid 

 

এর আগে দুপুরে নগরির ইউনিয়ন স্কয়ারে সমবেত হয়ে সর্বদলীয় সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহনকারীদের কাছে আন্দোলনের যৌক্তিকতা এবং পুলিশী নির্যাতনের বর্ণনা দেন। এসময় যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের হাতে নিহত ব্যাক্তিদের আত্মার শান্তি কামনা করে সুবিচার দাবি করা হয়। বক্তারা এসময় বলেন, বর্ণবাদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি অভিশপ্ত ব্যাধি। শতবছর ধরে একটি শ্রেনীর মানুষ আরেকটি শ্রেনীর মানুষকে নির্যাতন করে আসছে। শুধুমাত্র গায়ের রং কালো হওয়ায় চাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং সামাজিকভাবে বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন কৃষ্ণাঙ্গরা। এখন সময় এসেছে পরিবর্তনের। এই অবস্থার অবসান ঘটাতে হবে। ভেদাভেদ ভুলে সবাই একসাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশের উন্নয়নের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। বক্তারা বলেন, অতীতে যদি হত্যাকাণ্ডের সুবিচার হতো তাহলে পরবর্তিতে আর কোনো হত্যাকাণ্ড ঘটতো না। 
পরে ইউনিয়ন স্কয়ার থেকে মিছিল নিয়ে সিক্সথ এভিনিউে হয়ে সেন্ট্রাল পার্কের সামনে দিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বাসভবনের দিকে যায় বিক্ষোভকারীরা। কিন্তু বাসভবনের এক ব্লক আগেই পুলিশ বেরিকেড দিয়ে বিক্ষোভকারীদের আটকে দেয়। এসময় বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাচ করলেও পুলিশ ছিল একেবারেই নিশ্চুপ। কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে এসময় বিক্ষোভকারীদের হাতে পানির বোতল তুলে দিতে দেখা যায়।