বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বর্ণ আমদানি শুরু হয়েছে। ১১ কেজির প্রথম চালান নিয়ে এসেছে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড। বাজেটে অর্থমন্ত্রী সোনা আমদানির ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়ার পরপরই ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের পক্ষ থেকে দুবাই থেকে ১১ কেজি স্বর্ণ আমদানির এলসি খোলা হয়েছিল। মঙ্গলবার রাতে দেশে সেই স্বর্ণ এসেছে।
ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও এফবিসিসিআই সহ-সভাপতি দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বুধবার সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
গোল্ড ডিলার নিয়োগের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১৯ সালের মার্চ মাসে সার্কুলার দেয়। ওই সার্কুলারে ৫০টি প্রতিষ্ঠান ও কয়েকটি ব্যাংক আবেদন করলেও সব শর্ত পূরণ না হওয়ায় মাত্র ১টি ব্যাংক ও ১৮টি প্রতিষ্ঠানকে নবায়নযোগ্য দুই বছর মেয়াদী লাইসেন্স দেয়। স্বর্ণ নীতিমালায় দেশীয় শিল্পের বিকাশ ও রফতানি বাণিজ্য সম্পসারণের জন্য সোনা আমদানির জন্য ‘গোল্ড ডিলার’ নিয়োগের বিধান রাখা হয়।
গত ১০ জুন ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড তাদের গোল্ড ডিলারশিপের অনুকূলে ১১ কেজি (১১০০০ গ্রাম) পাকা স্বর্ণ আমদানির জন্য আবেদন করে। আবেদনটি যাচাই বাছাই করে বাংলাদেশ ব্যাংক অনাপত্তি দেয়।
এবারের বাজেটে স্বর্ণ আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করায় অনেকেই আমদানি করার উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, ২০১৮ সালের আগে বাংলাদেশে বৈধভাবে স্বর্ণ আমদানির সুযোগ ছিল না। ওই বছর সরকার দেশের জুয়েলারি শিল্পের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ স্বর্ণ নীতিমালা প্রণয়ন করে। তাতে স্বর্ণ আমদানির সুযোগ দেওয়া হলেও ভ্যাট বেশি হওয়ার কারণে কেউ আমদানি করতে আগ্রহ দেখায়নি। তবে এবারের বাজেটে ভ্যাট কমানোয় অনেকেই আমদানির উদ্যোগ নিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘এটাই ৪৯ বছরের ইতিহাসে বাংলাদেশে বৈধপথে প্রথম স্বর্ণ আমদানি। এর মধ্য দিয়ে দেশের জুয়েলারি শিল্পের ইতিহাসে একটি সোনালী অধ্যায়ের সূচনা হলো। এতদিন যে গোল্ড আসত, তা অবৈধ পথে আসত। আর কিছু আসতো ব্যাগেজ রুলসের আওতায়।’
এখন দেশে ‘গোল্ডনির্ভর’ শিল্প গড়ে ওঠার প্রত্যাশা জানিয়ে আগরওয়ালা বলেন, ‘কাঁচামাল আসা শুরু হল, এখন এ খাত বিকশিত হবে। একটার পর একটা শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে। সুতা আমদানি করে পোশাক তৈরি করে বিভিন্ন দেশে রফতানি করে যেমন বিদেশি মুদ্রা দেশে আসছে; ঠিক তেমনি গোল্ড দিয়ে তৈরি নানান ধরনের গহনা রফতানি করেও বিদেশি মুদ্রা আসবে।’
২০২০-২১ অর্থবছরে সরকার জুয়েলারি খাত থেকে ৫০০ কোটি টাকার বেশি কর পাবে বলে এই ব্যবসায়ী অনুমান করেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সুবিধা হচ্ছে, সস্তা শ্রম। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দেশে গোল্ডনির্ভর বড় বড় শিল্প গড়ে উঠবে। বিনিয়োগ বাড়বে; কর্মসংস্থান হবে। এভাবে আমরা জিডিপিতে ভূমিকা রাখতে চাই। এর আগেও ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশে প্রথম ও একমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে আইএম ৪ এর মাধ্যমে রাফ বা অমসৃণ ডায়মন্ড আমদানি করে কাটিং ও পলিশিং করে পলিশড ডায়মন্ড বিদেশে রফতানি করছে।