logo
আপডেট : 18 July, 2020 22:59
রিজেন্ট কেলেঙ্কারীতে দুদকে ডাক পাচ্ছেন ডিজিসহ এক ডজন কর্মকর্তা
* চলতি সপ্তাহেই পাচ্ছেন তলবি নোটিশ * ফাঁসতে যাচ্ছেন মুগদা হাসপাতালের পরিচালকও
স্বপ্না চক্রবর্তী, ঢাকা

রিজেন্ট কেলেঙ্কারীতে দুদকে ডাক পাচ্ছেন ডিজিসহ এক ডজন কর্মকর্তা

করোনা পরীক্ষায়  জালিয়াতির অভিযোগে দেশ-বিদেশে সমালোচিত রিজেন্ট হাসপাতাল কেলেঙ্কারিতে এবার দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাক পেতে  স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ অন্ততঃ ১২ জন কর্মকর্তা। চলতি সপ্তাহেই তাদের কাছে তলবি নোটিশ পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছে দুদক কর্তৃপক্ষ। একই সাথে জানা যায়, চিকিৎসকদের হোটেলে রাখার খরচে হেরফেরের অভিযোগে তলব পেতে যাচ্ছেন মুগ্দা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালকও।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুদকের এক কর্মকর্তা নিউইয়র্ক মেইলকে বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ, অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানাসহ প্রায় এক ডজন কর্মকর্তা এবার দুর্নীতি দমন কমিশেনর ডাক পাচ্ছেন। নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে রিজেন্ট হাসপাতালেক করোনা পরীক্ষার অনুমতি দেয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে দুদক। চলতি সপ্তাহের যেকোনো দিন দুদকে হাজির হতে তলবি নোটিশ পেতে পারেন তারা।

দুদকের দায়িত্বশীল সূত্র সময়ের আলোকে নিশ্চিত করেছে, রেকর্ডপত্র স্বাক্ষর থাকায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ, অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডাক্তার নাসিমা সুলতানা, হাসপাতাল ও ক্লিনিক বিভাগের পরিচালক ডাক্তার আমিনুল হাসান, একই বিভাগের উপ-পরিচালক ডাক্তার মোহাম্মদ ইউনূস আলী, সহকারী পরিচালক শফিউর রহমানসহ একডজন কর্মকর্তাকে কয়েক ধাপে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

দুদক বলছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাথে রিজেন্ট হাসপাতালের যে চু্ক্তি হয়, তাতে অর্থের বিনিময়ে করোনার নমুনা সংগ্রহের বিষয়টি ছিলো না। কিন্তু কোভিড ১৯ এর প্রতি টেস্ট বাবদ তিন হাজার টাকা করে নিতো রিজেন্ট হাসপাতাল। জানা যায়, করোনার নমুনা পরীক্ষা নিয়ে রিজেন্ট হাসপাতােলর জালিয়াতির বিষয় জুনের প্রথম সপ্তাহে নজরে আসে জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান নিপসমের। 

প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অধ্যাপক ডাক্তার বায়জীদ খুরশিদ রিয়াজ বিষয়টি লিখিতভাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে জানালেও তিনি রিজেন্টের এমন প্রতারণার বিষয়ে কোনো ব্যবস্থায়ই নেননি। ফলে করোনা পরীক্ষার নামে রিজেন্ট হাসপাতালের দুর্নীতি চলতেই থাকে।  তাই স্বাক্ষী হিসেবে বক্তব্য নেয়া হতে পারে নিপসমের পরিচালক বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজের।

এদিকে সম্প্রতি রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ‘হোটেল ৭১’ এ চিকিৎসকদের থাকার ব্যায়সংক্রান্ত খরচ সংক্রান্ত বিষয়ে তথ্য ও রেকর্ডপত্র চায় দুদক।

দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান মিরাজ দুটি আলাদা পত্রের মাধ্যমে এসব তথ্য ও রেকর্ডপত্রের সঠিক উত্তর এখনো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে না পাওয়ায় যেকোনো সময় মুগ্দা হাসপাতালের পরিচালককেও তলব করা হতে পারে দুদক কার্যালয়ে।

দুদকে পত্রে বলা হয়, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ও অধ্যক্ষ এবং অন্যদের বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে রেকর্ডপত্র চাওয়া হয়।

উল্লেখযোগ্য রেকর্ডপত্রের মধ্যে রয়েছে- কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসা সেবাদানকারী চিকিৎসক, নার্স ও অন্যদের থাকা-খাওয়ার মূল্য নির্ধারণ সংক্রান্তে ‘হোটেল ৭১’ এর সাথে যোগাযোগ, আলোচনা এবং সম্পাদিত চুক্তিপত্রের সত্যায়িত কপি। 

বর্ণিত বিষয়ে 'হোটেল ৭১’ এর অনুকূলে এ যাবৎ পরিশোধিত অর্থের ব্যয় মঞ্জুরিপত্রের কপি, বিলের কপি এবং চেকের কপি, চেক গ্রহণকারীর নাম-ঠিকানাসহ সংশ্লিষ্ট নথির সত্যায়িত কপি। পত্রে এ-সংক্রান্ত আরও কিছু প্রয়োজনীয় রেকর্ডপত্র চাওয়া হয়। কিন্তু প্রায় ১ সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা না পেয়ে তলবের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।