সীমান্ত হত্যা পুরোপুরি বন্ধ এবং তিস্তাসহ সাতটি নদীর পানিবণ্টন সমস্যার সমাধানের বিষয়ে একমত হয়েছে বাংলাদেশ ও ভারত।
মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের নেতৃত্বে যৌথ পরামর্শক কমিশনের (জেসিসি) বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এ তথ্য জানিয়েছেন।
করোনা মহামারির কারণে ভার্চুয়ালি হয়েছে এবারের বৈঠক। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর নিজ নিজ দেশ থেকে এ বৈঠকে যোগ দেন।
বৈঠকের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সীমান্ত হত্যা নিয়ে বাংলাদেশ উদ্বিগ্ন। এ ইস্যুতে ভারতও একই প্রকার মনোভাব প্রকাশ করেছে। দুই দেশের মধ্যে ফ্লাইট পরিচালনা করতে আলোচনা হয়েছে। তিস্তা নদীর পানিবণ্টন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ন্যায্যতার ভিত্তিতে তিস্তাসহ সাতটি নদীর পানিবণ্টন শিগগিরই হবে।’
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, অভিন্ন নদ-নদীগুলোর পানিবণ্টন, ভারতীয় ঋণের (লাইন অব ক্রেডিট, সংক্ষেপে এলওসি) আওতাধীন প্রকল্পগুলোর দ্রুত বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে নয়াদিল্লিতে কমিশনের পঞ্চম বৈঠক হওয়ার পর বাংলাদেশ জেসিসির ষষ্ঠ বৈঠক আয়োজন করার কথা, যা এখন ভার্চুয়ালি হলো।
চলমান করোনা মহামারির প্রেক্ষাপটে উভয় পক্ষই স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেছে। বিশেষ করে, করোনার ভ্যাকসিন সরবরাহ, বিতরণ এবং সহ-উৎপাদনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ভবিষ্যতে সম্ভাব্য ভ্যাকসিন সরবরাহের জন্য বাংলাদেশকে অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়ে ভারতের আশ্বাসের প্রশংসা করেছেন ড. মোমেন।
উভয় পক্ষই সম্মিলিতভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পঞ্চাশতম বার্ষিকী উদযাপন করতে সম্মত হয়েছে। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে ভার্চুয়াল সভা হবে দুই দেশের মধ্যে। ঐতিহাসিক মুজিবনগর-কলকাতা সড়ক পুনরায় চালু করা হবে। বিজয় এবং বন্ধুত্বের ৫০ বছর উপলক্ষে ওয়েবসাইট চালু, দুই পক্ষই বঙ্গবন্ধু ও গান্ধীকে নিয়ে ডিজিটাল যাদুঘর প্রতিষ্ঠায় একমত হয়েছে। সাফটার আওতায় দেওয়া শুল্ক ছাড়ের জন্য ভারতকে ধন্যবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশে।
পেঁয়াজের মতো প্রয়োজনীয় পণ্য রপ্তানির দিকে নজর রাখতে ড. সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্করের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ড. মোমেন।
বৈঠককালে বাংলাদেশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, জাতিসংঘ সুরক্ষা কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে ভারত রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসনে স্থায়ী সমাধানের জন্য আরও অর্থবহ ভূমিকা পালন করবে।