মার্কিন নির্বাচনের ৩৫ দিন আগেই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী জো বাইডেনের মধ্যে প্রথম বিতর্ক ছিলো ‘বিশৃঙ্খলপূর্ণ’। স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার ৯০ মিনিট ধরে চলে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জো বাইডেনের মধ্যে উত্তপ্ত বিতর্ক। তারা বিশ্বাসযোগ্যতা ও কর্মদক্ষতা নিয়ে একে অন্যকে আক্রমণ করেন।
বিতর্কের এক পর্যায়ে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ‘পোষা কুকুরছানা’ বলেছেন ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেন।
বিতর্ক পরবর্তী এক জনমত জরিপে সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, জরিপে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের বেশিরভাগই মনে করেন বিতর্কে জিতেছেন বাইডেন।
সিএনএন জানিয়েছে, তাদের জরিপে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে প্রতি ১০ জনে ছয় জন মনে করেন, বিতর্কে দুর্দান্ত পারফরমেন্স দেখিয়েছেন বাইডেন। ফলে এতে তিনিই জিতেছেন। অন্যদিকে জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ২৮ শতাংশ মনে করেন বিতর্কে আসলে জিতেছেন ট্রাম্প।
বিতর্কের আগে একই ব্যক্তিদের মধ্যে ৫৬ শতাংশ মত দিয়েছিলেন, জো বাইডেন বিতর্কে ভালো করবেন। অন্যদিকে ৪৩ শতাংশ মত দিয়েছেন যে, ডিবেটে ট্রাম্পই বিজয়ী হবেন। দৃশ্যত আগে ট্রাম্পের ব্যপারে আশাবাদী ব্যক্তিদের অনেকেই বিতর্কের পর তাদের মত পরিবর্তন করেছেন।
৬৯ শতাংশ মনে করেন ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বাইডেনের অভিযোগ যৌক্তিক। অন্যদিকে ৩২ শতাংশ মনে করেন, ট্রাম্প যেভাবে বাইডেনকে আক্রমণ মনে করেছেন সেটি যথাযথ।
বিতর্কে বাইডেন বলেন, করোনা নিয়ে প্রেসিডেন্টের কোনো পরিকল্পনা ছিল না। এর জবাবে ট্রাম্প বলেন, এটা ছিল চীনের ভুল যে। এরকম হওয়া কখনোই উচিৎ ছিলো না। তবে আমরা দুর্দান্ত কাজ করেছি। এ সময় ট্রাম্প আরো বলেন, বাইডেন এমন পরিস্থিতিতে পুরো দেশ বন্ধ করে দিতেন এবং পুরো দেশকে ধ্বংস করে দিতেন।
সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ট্রাম্পের প্রতি অভিযোগ ছুড়ে বলেন, তিনি যা কিছু বলছেন তা নির্জলা মিথ্যা। সবাই জানে তিনি মিথ্যাবাদী।
মার্কিন প্রেসিডেন্টকে লক্ষ্য করে বাইডেন আরও বলেন, ‘আপনি কি চুপ করবেন?’ একপর্যায়ে বলেন, ‘এই জোকারের কাছ থেকে কোনো কথা আদায় করা শক্ত।’
যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় এ পর্যন্ত ২ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় মৃত্যু বেশি। মৃত্যুর এই হার নিয়ে ট্রাম্পকে আক্রমণ করেন বাইডেন। তিনি ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেন, ‘করোনায় মারা যাওয়ায় রান্নাঘরের টেবিলে কতজনের চেয়ার খালি পেয়েছেন?’
পাল্টা জবাবে ট্রাম্প বলেন, কখনও আমার সঙ্গে বেশি চালাকির চেষ্টা করবেন না। তিনি করোনারোধে মাস্ক পরায় বাইডেনের উৎসাহ নিয়ে কটাক্ষ করেন।
এদিকে ট্রাম্পের ১০ বছর ধরে আয়কর না দেওয়ার বিষয়ে বিতর্কে বাইডেন বলেন, আপনি মার্কিন ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ প্রেসিডেন্ট। একজন স্কুলশিক্ষকও আপনার চেয়ে বেশি আয়কর দেন। এর জবাবে আয়কর নিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনকে অস্বীকার করেন ট্রাম্প।