logo
আপডেট : 28 January, 2021 12:31
লালমনিরহাটের সেই অসহায় পরিবারের বাড়ি সংষ্কার করে দিলেন নিউ ইয়র্কের ডা. ফেরদৌস খন্দকার

লালমনিরহাটের সেই অসহায় পরিবারের

বাড়ি সংষ্কার করে দিলেন নিউ ইয়র্কের ডা. ফেরদৌস খন্দকার

আরিফা জাহান বিথি, রংপুর থেকে:

লালমনিরহাটের পঞ্চাশোর্ধ মানসিক ভারসাম্যহীন হতদরিদ্র সেই পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়েছেন নিউ ইয়র্কের জনপ্রিয় চিকিৎসক ডা. ফেরদৌস খন্দকার। রংপুর নারী ক্রিকেট একাডেমির স্বেচ্ছাসেবক মেয়েদের মাধ্যমে ওই অসহায় পরিবারটির ঘর সংষ্কার করে দিয়েছেন তিনি।

। লালমনিরহাটের শাজাহান কলোনীতে মানসিকভাবে অসুস্থ্য আব্দুল মালেক (৫০)  পাঁচ সদস্যের পরিবার অতি কষ্টে ছোট্ট একটি ঘরে জীর্ণ-শীর্ন ভাবে বসবাস করেন। একসময় চায়ের দোকানে কাজ করলেও অসুস্থ্য হওয়ার পর থেকে আর কাজ করতে পারেন না। ছেলে বাবলা অন্যের জমিতে কাজ করে সংসার চালায়। তবে কাজ না থাকায় বেশিরভাগ সময় অনাহারে-অর্ধাহারে থাকতে হয় তাদের। ঘরের বেড়া এবং চালে পলিথিন আর কাপড় দিয়ে আটকানো। একটু বৃষ্টি হলেই ঘরের সবকিছু ভিজে যায়। রাতে ঘুমাতে না পেরে উঠে বসে থাকে তারা। শীতকালে ঠান্ডা বাতাসের কারণে বছরের পর বছর নির্ঘুম রাত কেটেছে তাদের। কোনোভাবেই পেরে উঠছিল না ঘরটা ঠিক করতে। ঠান্ডায় ৬মাসের শিশুটি অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে বেশ কিছুদিন ধরে। চিকিৎসার টাকাও নেই তাদের।

                                                   সংষ্কারের আগে ঘরের ছবি- 

রংপুর উইমেন্স ড্রিমার ক্রিকেট একাডেমির এক শিক্ষার্থী জানান, ক্রিকেট একাডেমির এক সদস্যের কাছে জানতে পেরে মানবেতর জীবন যাপন করা পরিবারটির সহায়তার জন্য নারী ক্রিকেট একাডেমির পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় নিউ ইয়র্কের জনপ্রিয় চিকিৎসক ডা. ফেরদৌস খন্দকার ভাইয়ের সাথে। মানবিক এই ব্যাক্তিকে অনুরোধ জানানো হয় পরিবারটিকে সহযোগিতা করার জন্য। তিনি সাথে সাথে রাজি হয়ে যান। কথা দিলেন যে কোনো ভাবেই হোক ওই পরিবারটির পাশে দাঁড়াবেন। একাডেমির মেয়েরা সিদ্ধান্ত নেয় তারা নিজেরাই বাড়িটি সংষ্কার করে দেবে। ফেরদৌস খন্দকারের পাঠানো টাকা দিয়ে একাডেমির ক্রিকেটার মনিকা, শানু, মৌ, খুশি, রিমি, আরফিনা, একা আর নদী চলে যায় সেই লালমনিরহাটের সেই অজ পাড়াগাঁয়ে। সবাই মিলে তিন দিন রংপুর থেকে লালমনিরহাট গিয়ে কাজ করেছে। প্রতিদিন দুপুরে নিজেরা রান্না করে পরিবারটিকে খাইয়েছে আর আমরা নিজেরা খেয়েছে। তিনদিন পর ঘরটি নিজেদের হাতে তৈরি করে দিতে পেরেছে তারা।

একাডেমির স্বেচ্ছাসেবক মেয়েরা জানান, আমরা নিজেরাই অনেকে প্রায় গৃহহীন। তারপরও এই পরিবারটির পাশে থাকতে পেরে খুব ভালো লাগছে, দারুন অনুভুতি। সব মেয়েরাই খুব খুশি এই ভালো কাজটি করতে পেরে।  বাড়ির মালিক আব্দুল মালেক জানিয়েছেন, অনেকদিন পর পরিবারের সবাইকে নিয়ে নিশ্চিন্তে ভালোভাবে ঘুমিয়েছেন। অসহায় পরিবারটির জন্য কিছু করতে পেরে ভালো লাগছে। ডা. ফেরদৌস খন্দকার আর্থিক সহযোগিতা করেছিলেন বলেই আমরা এই মহৎ কাজটি করতে পেরেছি বলে জানান উইমেন্স ড্রিমার ক্রিকেট একাডেমির মেয়েরা।