পাকিস্তানের একটি চিড়িয়াখানায় দুটি ১১ মাস বয়সী সাদা বাঘ শাবকের মৃত্যু হয়েছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এদের মৃত্যু হয়েছে। লাহোর চিড়িয়াখানার কর্মকর্তারা ভেবেছিলেন এদের ফেলাইন প্যানলিউকোপেনিয়া রোগ হয়েছে এবং মারা যাওয়ার চার দিন আগে থেকে এই রোগের চিকিৎসা দেয়া শুরু হয়েছিল। রোগটি পাকিস্তানে বেশ পরিচিত এবং এটি বিড়াল জাতীয় প্রাণিকে আক্রান্ত করে থাকে।
ময়নাতদন্তের পর দেখা যায় শাবকগুলোর ফুসফুস ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এগুলো গুরুতর সংক্রমণে ভুগছিল। এর ফলে রোগ বিশেষজ্ঞরা উপসংহারে আসেন যে শাবক দুটি করোনাভাইরাসের কারণেই মারা গেছে।
বাঘ শাবকগুলোর কোনো পিসিআর পরীক্ষা করানো হয়নি। তবে চিড়িয়াখানার উপ পরিচালক কিরণ সালিম রয়টার্সকে বলেন, শাবক দুটি করোনাভাইরাসের শিকার বলেই চিড়িয়াখানার বিশ্বাস।
তিনি বলেন, এই মৃত্যুর পর চিড়িয়াখানার সকল কর্মকর্তাদের করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় ছয়জনের করোনা শনাক্ত হয়, যাদের মধ্যে ওই শাবকগুলো দেখাশোনা করা এক কর্মকর্তা রয়েছেন।
এটি ময়নাতদন্তে পাওয়া অনুসন্ধানকে আরো দৃঢ় করেছে। যে ব্যক্তি শাবকগুলো দেখাশোনা করত ও খাওয়াতো, সম্ভবত তার কাছ থেকেই এগুলো ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছিল বলেন সালিম।
পাকিস্তানের চিড়িয়াখানাগুলো প্রায়শই প্রাণি অধিকার রক্ষা কর্মীদের রোষের মুখে পড়ে। কর্মীদের দাবি, দেশটির চিড়িয়াখানাগুলোতে বাজে পরিবেশের কারণে সেখানে শত শত প্রাণির মৃত্যু হয়।
জেএফকে অ্যানিমাল রেসকিউ অ্যান্ড শেল্টারের প্রতিষ্ঠাতা জুফিশান আনুশে বলেন, লাহোর চিড়িয়াখানার সর্বশেষ বাঘ শাবক দুটি মারা গেল এবং আবারো ব্যবস্থাপনা ও কর্তৃপক্ষের অবহেলার চিত্র সামনে এল।
তিনি বলেন, সাদা বাঘ খুবই বিরল প্রজাতির এবং সুস্থভাবে বাঁচার জন্য এদের নির্দিষ্ট আবাসস্থল ও পরিবেশের দরকার হয়। এদেরকে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাঁচায় রেখে কোনো চিকিৎসার ব্যবস্থা না করলে এ ধরণের ঘটনা আমরা দেখতে থাকব।
তবে কিরণ সালেম এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নিরাপত্তা ও পরিচ্ছন্নতা ব্যবস্থা যাচাই করতে প্রাণি অধিকার কর্মীরা চিড়িয়াখানায় স্বাগত।