logo
আপডেট : 24 February, 2021 09:14
গুণীজন সৈয়দ আবুল মকসুদ মারা গেছেন
ঢাকা অফিস

গুণীজন সৈয়দ আবুল মকসুদ মারা গেছেন

বিশিষ্ট লেখক, গবেষক, প্রাবন্ধিক ও সাংবাদিক সৈয়দ  আবুল মকসুদ আর নেই। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। (ইন্নালিল্লাহি....রাজিউন)।

সৈয়দ আবুল মকসুদের ছেলে সৈয়দ নাসিফ মকসুদ বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, বাবা ৩-৪ দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে শ্বাসকষ্ট শুরু হলে উনাকে স্কয়ার হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে আনার আগেই বাবা মারা গেছেন।

সৈয়দ আবুল মকসুদের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আরও শোক জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান।

এদিকে, সৈয়দ আবুল মকসুদের জানাজা ও দাফনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তার মেয়ে জিহাদ মকসুদ দেশে ফেরার পর। তিনি এখন ভারতে অবস্থান করছেন।

সৈয়দ নাসিফ মকসুদ বলেন, আমার বোন এ মুহূর্তে ভারতে অবস্থান করছেন। তিনি দেশে ফিরছেন। তার ফেরার পর জানাজা ও দাফনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

মরহুমের মরদেহ এখন স্কয়ার হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে। 

বাংলাদেশের রাজনীতি, সমাজ, সাহিত্য ও সংস্কৃতি নিয়ে নানা বই ও প্রবন্ধ লিখেছেন সৈয়দ আবুল মকসুদ। বিখ্যাত সাহিত্যিক ও রাজনীতিবিদদের জীবন ও কর্ম নিয়ে গবেষণামূলক প্রবন্ধ লিখেছেন। পাশাপাশি কাব্যচর্চাও করেছেন। তার রচিত বইয়ের সংখ্যা চল্লিশের ওপর। তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বুদ্ধদেব বসু, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী প্রমুখ প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও রাজনীতিবিদদের জীবন ও কর্ম নিয়ে গবেষণা করেছেন।

বাংলা সাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের জন্য তিনি ১৯৯৫ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। 

সৈয়দ আবুল মকসুদ ১৯৪৬ সালের ২৩ অক্টোবর মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলার এলাচিপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা সৈয়দ আবুল মাহমুদ ও মা সালেহা বেগম।

সৈয়দ আবুল মকসুদের কর্মজীবন শুরু হয় ১৯৬৪ সালে এম আনিসুজ্জামান সম্পাদিত সাপ্তাহিক নবযুগ পত্রিকায় সাংবাদিকতার মাধ্যমে। এটি ছিল পাকিস্তান সোশ্যালিস্ট পার্টির মুখপত্র। পরে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি সমর্থিত সাপ্তাহিক ‘জনতা’য় কাজ করেন কিছুদিন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ বার্তা সংস্থায় যোগ দেন। ২০০৮ সালের ২ মার্চ বার্তা সংস্থার সম্পাদকীয় বিভাগের চাকরি ছেড়ে দেন।

সৈয়দ আবুল মকসুদ সাহিত্যিক হিসেবেও খ্যাতিমান ছিলেন। ১৯৮১ সালে তার কবিতার বই বিকেলবেলা প্রকাশিত হয়। ১৯৮৭ সালে তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ দারা শিকোহ ও অন্যান্য কবিতা প্রকাশিত হয়। মানবাধিকার, পরিবেশ, সমাজ ও প্রেম নিয়ে তিনি কবিতা লিখেছেন। তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বুদ্ধদেব বসু, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী প্রমুখ প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও রাজনীতিবিদদের জীবন ও কর্ম নিয়ে গবেষণা করেছেন।

আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে নিয়ে তিনি লিখেছেন মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর জীবন, কর্মকাণ্ড, রাজনীতি ও দর্শন (১৯৮৬) ও ভাসানী কাহিনী (২০১৩)। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহকে নিয়ে লিখেছেন সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর জীবন ও সাহিত্য (২০১১) ও স্মৃতিতে ওয়ালীউল্লাহ (২০১৪)।