তুহিন সানজিদ:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভোট চুরি করে ক্ষমতায় যেতে পারবে না বলেই নির্বাচনকে এত ভয় পায় বিএনপি। সুষ্ঠ নির্বাচন হলেই তারা ভয় পায়। কারণ তারা কখনও জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসেনি। ১৯৯৬ সালের ১৫ফেব্রুয়ারি ভোট চুরি করে তার ক্ষমতায় এসেছিল কিন্তু জনগণ পরের মাসেই তাদের ক্ষমতা থেকে টেনে নামিয়েছিল। খালেদা জিয়া পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিল। এর পর আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে। বিএনপির মতো জনগণের ভোট চুরি করে আওয়ামীলীগ কখনও ক্ষমতায় আসেনি। আওয়ামীলীগের আমলে প্রত্যেকটি নির্বাচনই সুষ্ঠ হয়েছে।
জাতিসংঘের ৭৭তম সাধারণ অধিবেশনে যোগদান পরবর্তি এক সংবাদ সম্মলনে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় জাতিসংঘ বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু হলে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, ইভিএম বিশ্বের একটি অত্যাধুনিক ভোটিং পদ্ধতি। বহু দেশে এই পদ্ধতিতে সুষ্ঠ নির্বাচন হচ্ছে। কিন্তু এতেও বিএনপির ভয়। কেননা সঠিক পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে বিএনপি ক্ষমতায় আসতে পারে না। তাদের সময় ১কোটি ২৩লাখ ভুয়া ভোটার তৈরি করে ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিল। আওয়ামীলীগ সেইসব ভুয়া ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে। এজন্য ভোটের আগে তারা উল্টা পাল্টা কথা বলতে থাকে। এখন জনগণ স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিয়ে গত ১৩বছরে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নের কথা তুলে ধরেছি। কোভিড-১৯ মহামারি, উইক্রেন যুদ্ধ, জলবায়ু পরিবর্তন, খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা, বহুপাক্ষিকবাদ, বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা, বৈশ্বিক সংকটের মুখে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের চ্যালেঞ্জ, সংকট মোকাবেলায় উপযুক্ত তথ্যপ্রযুক্তির অবকাঠামো গড়ে তোলার বিষয়ে আলোচনা করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে আমরা মিয়ানমার থেকে এক মিলিয়নের বেশি বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্টিকে আশ্রয় দিয়েছি। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে দ্বিপাক্ষিক, ত্রিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক কোনো উদ্যোগই এখনও সফল হয়নি। মিয়ানমারে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও চলমান সংঘাত বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার পথ দুরহ করে তুলেছে। নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের নিরাপদে দেশে ফিরে যাওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা এবং কার্যকর ভূমিকা গ্রহনের জন্য জাতিসংঘ এবং বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহবান জানিয়েছি। জাতিসংঘের হাই লেভেল মিটিং চলাকালে ৮টি উচ্চ পর্যায়ের সভা ও সাইড ইভেন্ট ছাড়াও কয়েকটি রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের সাথে ১২টি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নেন বলেও জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড মহামারি, ইউক্রেন যুদ্ধ সংঘাতের কারণে সৃষ্ট খাদ্য ও জ্বালানি সংকট এবং অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তির জন্য পারষ্পারিক সংহতি প্রদর্শন করা প্রয়োজন। এই যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এজন্য সংকট নিরসনে জাতিসংঘকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়ার উপর গুরুত্ব আরোপ করি। “আমি বলেছি-জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রণীত শান্তি ও উন্নয়নভিত্তিক পররাষ্ট্রনীতি বর্তমান সংকট নিরসনে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্কে নিজস্ব ভবনে কনস্যুলেট এবং ঢাকা-নিউইয়র্ক সরাসরি বিমান চালুর বিষয়ে আশ্বস্থ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম উপস্থিত ছিলেন।