হারিকেন ইয়ানের আঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য ফ্লোরিডার বিভিন্ন শহরে অন্তত ৪৫ জন নিহত হয়েছেন। ঝড়ের তাণ্ডবে গোটা রাজ্য তছনছ হয়ে গেছে।
শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ফ্লোরিডার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আঘাত হানে হারিকেন ইয়ান, যেটিকে ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফ্লোরিডা মূলত একটি উপদ্বীপ। মার্কিন এ অঙ্গরাজ্যের একদিকে আটলান্টিক মহাসাগর, অন্যদিকে মেক্সিকো উপসাগর।
ঘূর্ণিঝড় পূর্বাভাসকেন্দ্র ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি) জানিয়েছে, ২৮ সেপ্টেম্বর বুধবার স্থানীয় সময় ৩টার দিকে ফ্লোরিডার ফোর্ট মায়ার্স শহরের পশ্চিমে কায়োকাস্তা উপকূলে আছড়ে পড়ে ইয়ান। সে সময় ফোর্ট মায়ার্স ও তার আশপাশের এলাকায় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২৪০ কিলোমিটার। এরপর বৃহস্পতিবার ঝড়টি দক্ষিণ দিকে সরে যেতে থাকে এবং ফ্লোরিয়ার পার্শ্ববর্তী অঙ্গরাজ্য নর্থ ও সাউথ ক্যারোলাইনায় গিয়ে শক্তি হারিয়ে সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়।
প্রবল ঝড়ো বাতাস ও জলোচ্ছ্বাসে অঙ্গরাজ্যের উপকূলীয় বিভিন্ন শহরের ভবন ধ্বংস হয়েছে। বুধবার ঝড় যে শহরে আছড়ে পড়েছিল, সেই ফোর্ট মায়ার্স শহর প্রায় হ্রদে পরিণত হয়েছে। জলোচ্ছ্বাসের পাশাপাশি মুষলধারে বর্ষণের কারণে ফ্লোরিডার অরল্যান্ডোসহ সমুদ্র থেকে দূরবর্তী শহরগুলোতেও দেখা দিয়েছে বন্যা।
যুক্তরাষ্ট্রের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ফ্লোরিডা শাখা জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে পুরো ফ্লোরিডায় যে ৪৫ জন নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে ১৬ জনই ফ্লোরিডার।
এদিকে মেয়র জানিয়েছে, নিহতের প্রকৃত সংখ্যা ৪৫-এর চেয়ে অনেক বেশি হতে পারে।
তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদস্থানে সরিয়ে আনতে পেরেছি, কিন্তু তারপরও অনেককেই আনা সম্ভব হয়নি। ফলে প্রকৃত নিহতের সংখ্যা আরও বেশি হবে বলে আশঙ্কা করছি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শুক্রবার হারিকেন ইয়ানকে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয়সমূহের একটি উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন, এত বড় মাত্রার ধ্বংসযজ্ঞ যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক ইতিহাসে দেখা যায়নি। যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সেসব পুনর্গঠনে কয়েক বছর লেগে যেতে পারে।