পুরো বিশ্বই এখন সঙ্কটে আছে, কেউ স্বস্থিতে নেই মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, মন্দায় একটু কষ্ট হবে, তবে আমাদের খুব একটা সমস্যা হবে না। খাদ্যের কোনো ঘাটতি হবে না। বৈশ্বিক মন্দা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী দূরদর্শী পরিকল্পনা নিয়ে রেখেছেন।
তিনি বলেন, প্রায় দেড় কোটি মানুষকে টিসিবি ও ৫০ হাজার লোককে বিজিবির মাধ্যমে ১৫ টাকা করে চাল দেওয়া হচ্ছে এবং এ কার্যক্রম আরও কয়েক মাস ধরে চলবে। যাতে স্বল্প আয়ের লোকজন সমস্যায় না পড়েন।
রোববার (৬ নভেম্বর) নগরের রিকাবিবাজার কবি নজরুল অডিটরিয়ামে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গত নির্বাচনে আমি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, তার অধিকাংশ পূরণ হয়েছে। এই সরকারের আমলে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তাই দেশের মঙ্গল ও নিজেদের অস্থিত্বের স্বার্থে আওয়ামী লীগকে আবারো নির্বাচনে বিজয়ী করে ক্ষমতায় আনতে হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের বিরোধীরা খুবই দুর্বল। তারা হাওয়ার উপরে ভাসছে আর কেবল মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। যদিও আমাদের মধ্যে কিছু বিভেদ রয়েছে। তারপরও আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামলে কেউ ঠেকাতে পারবে না। কেননা, আওয়ামী লীগ অনেক শক্তিশালী রাজনৈতিক দল।
ড. মোমেন বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে যেসব দেশ আগে বাংলাদেশকে পাত্তা দিতো না, তারাও এখন আমাদের সম্মানের চোখে দেখে। বিএনপি সমবসময় বলে দেশে মানবাধিকার নেই। অথচ বাংলাদেশ এবার সর্বোচ্চ ভোটে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনামতে পররাষ্ট্র সম্পর্ক উন্নয়ন সম্ভব হচ্ছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি বলেন- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়ন ও গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। তার শাসনামলে মির্জা ফখরুল সাহেবেরা বাড়িতে নির্বিঘ্নে ঘুমাতে পারছেন। আমরাতো অমানবিক আচরণ করিনি। অথচ বিএনপির শাসনামলে মানুষের উপর জুলুম-অত্যাচার করা হয়েছিলো তা দেশের মানুষ ভুলে যায়নি। তাদের শাসনামলে আমরা বাড়িতে ঘুমাতে পারিনি, বাড়িঘর জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। আমাদের ব্যবসা- বাণিজ্য করতে দেওয়া হয়নি। নেতাকর্মীর হাত-পা ভেঙে দিয়েছিল। বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না।
তিনি বলেন, বর্তমানে আমরা গভীর ষড়যন্ত্র ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে চলছি। এসব ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে বের হয়ে আসতে হবে। এজন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। কেননা আওয়ামী লীগের প্রাণশক্তিই এ দেশের জনগণ। জনগণ ও সংগঠনের কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ সারাজীবন আন্দোলন সংগ্রাম ও লড়াই করে এসেছে।
দলীয় নেতাকর্মীদের কাজ করার নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, সামনে কঠিন সময় আসছে, লড়াই করতে হবে। এতে আমরা টিকে থাকবো, ভেবে বসে থাকলে চলবে না। সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির লোকজনের সঙ্গে সর্ম্পক বাড়াতে হবে। তাদের নিয়ে কাজ করতে হবে। তাছাড়া কর্মীসভার দিক নির্দেশনা, পরামর্শ সবকিছু ঘরের মধ্যে রাখলে হবে না, এসব মানতে হবে।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ।
সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেনের পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন ও সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, কেন্দ্রীয় সদস্য ড. মুশফিক হোসেন চৌধুরী, আজিজুস সামাদ ডন, উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান।
এছাড়াও বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা হাফিজ মজুমদার এমপি, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হাবিবুর রহমান এমপি প্রমুখ।
সিলেট/৬ নভেম্বর ২০২২